কয়েক সপ্তাহ আগেই নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলায় সিবিআই এবং ইডির তদন্তের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই স্থগিতেদেশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, এই মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। এই আবহে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, 'সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বলে যা ইচ্ছে তা করা যায়? জমিদারি নাকি?' বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই মন্তব্য আজ সুপ্রিম কোর্টে উত্থাপিত হল। আজ বিচারপতির এই মন্তব্য উত্থাপন করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। (আরও পড়ুন: বাংলায় ৪০ পার ১৭ জায়গায়, আগামী ক'দিন কোথায় কোথায় আরও বাড়বে তাপমাত্রা?)
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিতর্কিত মন্তব্যের পাশাপাশি এবিপি আনন্দকে দেওয়া তাঁর সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গও উত্থাপিত করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের সামনে তিনি বলেন, 'এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। এবিপি আনন্দকে দেওয়া তাঁর পুরো সাক্ষাৎকারটা দেখুন।' এরপর প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, দাস্টিস জেপি পাদরিওয়ালা এবং বিচারপতি পিএস নরসিংহ নিজেদের মধ্যে কিছু আলোচনা করেন। পরে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, সংবাদমাধ্যমে যা কিছু প্রকাশিত হয়, তা নিয়ে বিচারপতিরা আলোচনা করতে পারেন না। এর জবাবে অভিষেক মনু সিংভি বলেন, 'তবে এই ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আলাদা।' প্রধান বিচারপতি অবশ্য অভিষেক মনু সিংভির সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। তবে তিনি বলেন, 'রিপোর্টের বিষয় আদালত কক্ষে জোরে জোরে পড়বেন না।'
প্রসঙ্গত, গত ২ মার্চ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত এক দুর্নীতির মামলায় সিবিআই, ইডি-কে তদন্তের নির্দেশ দেন। তবে সেই নির্দেশের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টে মামলাকারীদের হয়ে মামলাটি লড়ছিলেন মুকুল রোহতগি। এই আবহে নিজের রায়ের ওপর সুপ্রিম স্থগিতাদেশের কথা শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'শুনেছি তিনি (আইনজীবী মুকুল রোহতগি) ৩০ লক্ষ টাকা করে নেন মামলা লড়তে। দুর্নীতির হাত তার মানে আরও অনেক লম্বা।' এরপর সুপ্রিম কোর্টের রায়কে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, 'স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিলই হল না। শুধুমাত্র ডায়েরি নম্বরের ভিত্তিতে তদন্তে স্থগিতাদেশ দিয়ে দেওয়া হল। এ কীভাবে হয়?'
এদিকে আজকে ফের একবার শীর্ষ আদালতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। কুন্তল ঘোষের চিঠির প্রেক্ষিতে সিবিআই এবং ইডি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করতে পারবে বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এই মামলার পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সংস্থা তৃণমূল সাংসদকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না। আগামী ২৪ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি।