মোটর যান আইন, ১৯৮৮-এর ধারা নং ১১২ অনুযায়ী রাস্তার সর্বোচ্চ গতি সীমা মনে রাখতে হবে প্রত্যেক চালককে। এমনই পর্যবেক্ষণ করল কেরল হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের কথায়, রাস্তার পাশে ‘স্পিড লিমিট’ সংক্রান্ত কোনও ‘সাইনবোর্ড’ না থাকলেও বাধ্যতামূলক ভাবে কেন্দ্রের নির্ধারিত গতি সীমা মনে রাখা প্রতিটি চালকের কর্তব্য।
কেরল হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস মণিকুমার এবং বিচারপতি সাজি পি চালির সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করে, ‘কেন্দ্রীয় সরকার সর্বোচ্চ গতির সীমা নির্ধারণ করে, তখন প্রতিটি গাড়ির চালক সেই নির্ধারিত সীমা অনুসরণ করতে বাধ্য। এটা সত্যি যে আইন অনুযায়ী রাজ্য সরকার গতি সীমা প্রদর্শনকারী ট্র্যাফিক সাইন বসাতে বাধ্য। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে যে একবার যখন সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার সর্বোচ্চ গতি সীমা নির্ধারণ করে দেয়, তখন আইনত সেই উল্লিখিত গতি সীমাতেই রাস্তায় যানবাহন চালাতে হবে চালকদের। রাস্তার প্রকৃতি এবং রুটের উপর গতি সীমা নির্ভর করে। আমাদের দৃষ্টিতে মোটরযান আইনের ১১২(১) ধারার অধীনে গতি সীমা মনে রাখা একজন চালকের জন্য বাধ্যতামূলক।’
আদালত আরও বলে, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের নির্ধারিত গতি সীমা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে হাই-টেক ট্র্যাফিক এনফোর্সমেন্ট কন্ট্রোল রুমের ইন্সপেক্টরের কাছে ক্ষমতা রয়েছে যে তারা মোটর যান আইন, ১৯৮৮ অনুযায়ী চার্জ মেমো জারি করতে পারে। কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপকে বেআইনি বলে আখ্যা দেওয়া যাবে না।’ উল্লেখ্য, গতি সীমা লঙ্ঘন করার জন্য তিরুবনন্তপুরমে এক ব্যক্তিকে ১৫০০ টাকা জরিমানা করেছিল ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের ইন্সপেক্টর। যে ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়, তিনি সেই জরিমানা খারিজের আবেদন করেন। তাঁর যুক্তি ছিল, রাস্তায় কোনও সাইনবোর্ড ছিল না গতি সীমা সংক্রান্ত। এই আবহে পুলিশের অধিকার নেই জরিমানা আরোপ করার। তবে সেই মামলাকারীর এই রিট পিটিশন খারিজ করে দেয় উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ। এর আগে হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চও মামলাকারীর পিটিশন খারিজ করে দিয়েছিল। সেটাই চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিলেন আবেদনকারী। তাঁর যুক্তি ছিল, সিঙ্গল বেঞ্চ কোনও যুক্তি ছাড়া পিটিশন খারিজ করেছিল। তবে সিঙ্গল বেঞ্চের রয়কে বহাল রেকে ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘আবেদনকারী যদি এটা মনে করেন যে তিনি নির্দিষ্ট গতি সীমা পার করেননি, তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের বক্তব্য পেশ করতে পারেন।’