ভোট-পর্বের মধ্যেই বিনামূল্যে করোনাভাইরাস টিকা বণ্টনের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তাতে আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ হয়নি বলে দাবি করলেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
সোমবার কেরালার স্থানীয় নির্বাচনের তিন তথা শেষ দফার ভোটগ্রহণ ছিল। কান্নুর জেলা ভোট দেওয়ার পর বিজয়ন দাবি করেন, ‘আমরা বিনামূল্যে কোভিড-১৯-এর চিকিৎসা করেছি এবং প্রতিরোধমূলক ওষুধও (টিকা) হল চিকিৎসার অংশ। আমরা একেবারে স্পষ্টভাবে জানিয়েছি যে বিনামূল্যে (টিকা) প্রদান করা হবে। তাতে আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।’
সেই সওয়ালের আগেরদিনই বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল কংগ্রেস এবং বিজেপি। দু'দলেরই দাবি ছিল, নির্বাচন প্রক্রিয়ার সময় বিনামূল্যে করোনা টিকা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন বিজয়ন। যিনি শনিবার কান্নুরে একটি সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের থেকে করোনা টিকা পাওয়ার অপেক্ষায় আছে রাজ্য সরকার। রাজ্য হাতে টিকা পেলে গেলে তা বিনামূল্যে বণ্টন করা হবে। অন্যান্য টিকার মতো করোনা টিকারও যাবতীয় খরচ বহন করবে রাজ্য।
সেই মন্তব্যের পরই বাম সরকারকে চেপে ধরেন বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা কে সি জোসেফ বলেন, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। গলা পর্যন্ত বিপদে ডুবে থাকা মুখ্যমন্ত্রী এখন নোংরা রাজনীতির শরণাপন্ন হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি। তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি আমরা।’ একইসুরে রাজ্য বিজেপির সভাপতি কে সুরেন্দ্রন বলেন, ‘উনি মনে করছেন যে অপমান এবং বদনাম থেকে রক্ষা করবে টিকা। কিন্তু উনি ভুল ভাবছেন।’
বিতর্কের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দাবি করা হয়, টিকা বণ্টন নিয়ে কোনও ঘোষণা করেননি। বরং একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে বিনামূল্যে টিকা বণ্টনের বিষয়টি বলেছেন। তাতে অবশ্য আক্রমণের ঝাঁঝ কমিয়ে ফেলতে রাজি হননি বিরোধীরা। বিশেষত এই স্থানীয় নির্বাচনকে আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে ‘সেমিফাইনাল’ ধরা হচ্ছে। যেখানে ত্রিশঙ্কু লড়াইয়ে আছে সিপিআইএমের নেতৃত্বাধীন লেফট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এলডিএফ), কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউনাউটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউডিএফ) এবং বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)।