ভারতে প্রথম মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের মৃত্যু হল। গত ৩০ জুলাই কেরলে এক ২২ বছরের যুবকের মৃত্যু হয়। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে ফিরেছিলেন তিনি। তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। সোমবার সেই নমুনায় মাঙ্কিপক্স পজিটিভ রিপোর্ট মিলেছে। এনআইভি পুণেতে নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল।
মৃতের আত্মীয়দের দাবি, ওই যুবক যে পজিটিভ রিপোর্ট পেয়ে তারপর দেশে ফিরেছেন, তা তাঁরা জানতেনই না। গত ৩০ জুলাই এ কথা তাঁরা জানতে পারেন। সেই একই দিনে রোগী প্রাণ হারান।
ভারতে মাঙ্কিপক্সের নিয়ন্ত্রণে বিশেষ টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর নেতৃত্বে থাকছেন ডক্টর ভি কে পল এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, 'ওই ব্যক্তি গত ২১ জুলাই এসেছিলেন। পরিবার এবং বন্ধুদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। অস্বাভাবিক খিঁচুনি, শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণগুলি ছিল। কিন্তু তাঁর কোনও ফোসকা বা ফুসকুড়ি ছিল না। প্রাথমিকভাবে ২০ জনের সংস্পর্শে এসেছিলেন তিনি। তাঁদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মী, পরিবার এবং বন্ধুরা রয়েছেন।'
জিনোম সিকোয়েন্সিং হয়েছে
ভ্যারিয়েন্টটি পশ্চিম আফ্রিকান। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে এটি A2 ভ্যারিয়েন্ট। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছে। কেন তিনি এত দেরিতে চিকিত্সা করান এবং মৃত্যুর কারণ শনাক্ত করতে একটি দল গঠন করা হয়েছে। এমনটাই বলেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ওই যুবক গত ২১ জুলাই ভারতে এসেছিলেন। তারপর থেকে পরিবারের সঙ্গেই ৬ দিন কাটিয়েছিলেন। ২৭ জুলাই ত্রিশুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার আগেই ১৯ জুলাই সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।
কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'ত্রিশুরের মৃত ব্যক্তি, ভারতে ফেরার একদিন আগেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে মাঙ্কিপক্সের পজিটিভ রিপোর্ট পান।' কিন্তু বাড়িতে সেটা ওই যুবক জানাননি বলে দাবি করা হচ্ছে।
রোগীর বয়স কম ছিল। অন্য কোনো অসুস্থতা বা স্বাস্থ্যগত সমস্যাও ছিল না। আর সেই কারণেই স্বাস্থ্য দফতর তাঁর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করছে, জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: Monkeypox or Chickenpox: মাঙ্কিপক্স নাকি চিকেনপক্স, কোনটি হয়েছে? লক্ষণগুলি দেখে চিনবেন কীভাবে
সংক্রমণ ছড়াতে পারে?
মাঙ্কিপক্সের এই বিশেষ ভ্যারিয়েন্টটি কোভিড-এর মতো খুব বেশি ভাইরাল বা সংক্রামক নয়। তবে, এটি ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছেই। তবে স্বস্তির বিষয়, তুলনামূলকভাবে, এই ভ্যারিয়েন্টে মৃত্যুর হার কম।
WHO-র মতে, মাঙ্কিপক্স একটি ভাইরাল জুনোসিস। অর্থাত্, এটি এমন একটি ভাইরাস যা পশু থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। প্রাণের ঝুঁকির দিক থেকে কম গুরুতর হলেও এতে গুটিবসন্তের মতো কষ্টকর উপসর্গ দেখা দেয়।