সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সময় মেজাজ হারালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নারায়ণ রাণে। শিবসেনা (উদ্ধবপন্থী) সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরবিন্দ সাওয়ান্তকে সভাকক্ষেই 'অপমান' করেন নারায়ণ রাণে। প্রাক্তন সতীর্থর উদ্দেশে 'তুই তুকারি' করেন মন্ত্রী। সেই সময় মন্ত্রীকে থামাতে হয় লোকসভার চেয়ারে থাকা রাজেন্দ্র আগরওয়ালকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গতকাল অরবিন্দ সাওয়ান্তকে আক্রমণ শানিয়ে বলেন, 'নীচে বসে পড়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নিয়ে বলার মুরোদ নেই তোমার। এরপর আর কিছু বললে তোমার মুরোদ আমি দেখে নেব।'
এদিকে অরবিন্দ সাওয়ান্তের সঙ্গে এভাবে কথা বলার জেরে বিরোধী সাংসদদের তোপের মুখে পড়েছেন নারায়ণ রাণে। মন্ত্রীর মেজাজ হারানোর ঘটনাটি টুইট করে আম আদমি পার্টি ক্যাপশনে লিখেছে, 'মোদীজির মন্ত্রী নারায়ণ রাণে গলির গুন্ডাদের ভাষায় ধমক দিচ্ছেন সংসদেই। মোদী সরকারকে কোনও প্রশ্ন করলে বিরোধী সাংসদদের অবিলম্বে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়। এভাবে সংসদে অভদ্র ভাষা প্রয়োগের জন্য কি বিজেপি এই সাংসদকে সাসপেন্ড করবে?' এদিকে উদ্ধবপন্থী শিবসেনা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী টুইট করে লিখেছেন, ‘এই ভদ্রলোক একজন সাংসদ। তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে নিজের সরকারের স্ট্যান্ডার্ড দেখাচ্ছেন। কত নীচে নামতে পারে এই সরকার।’
এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে অরবিন্দ সাওয়ান্ত নিজে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করে লেখেন, 'তিনি আমাদের কি হিন্দুত্ব শেখাবেন??? হিন্দু ধর্মের কেউ পালিয়ে যান না। মণিপুর নিয়ে SIT গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট, তখন কোথায় ছিল সরকার? সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে থাপ্পড় দিয়েছে, তারপরও আপনাদের লজ্জা নেই? এখনও কিছু মনে হচ্ছে না? আমাদের মহারাষ্ট্রে আজও একটি সংবিধান বহির্ভূত সরকার চলছে। মুখ্যমন্ত্রী থেকে সরকারের সব সদস্য অযোগ্য। অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলাকালীন মণিপুরের পরিস্থিতির পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের প্রতিও অবিচার তুলে ধরা হোক!'
এদিকে গতকাল অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনা চলাকালীন বিজেপি সরকার এবং নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ শানান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ও। সৌগত বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে আমার ব্যক্তিগত কোনও ক্রোধ নেই। তবে জুলিয়াস সিজারের ব্রুটাসের কথায়, আমি মোদীকে কম ভালোবাসি, এমন কিন্তু নয়। তবে আমি ভারতকে বেশি ভালোবাসি। যদি কেউ ভারতকে ভালোবাসে, তাহলে সে মোদীর বিরোধিতা করবে। কারণ তাঁর সরকার মিথ্যে প্রতিশ্রুতির সরকার। এবং ভুলভাল সব নীতি কার্যকর করেছে এই সরকার। তবে আমি ব্যক্তিগত আক্রমণে যেতে চাই না। আমি এটা জানতে চাই না যে মোদীজির শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটা। বা গুজরাট দাঙ্গা, বিবিসির তথ্যচিত্র নিয়েও কথা বলতে চাই না আমি। তবে এই সরকার যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে দিচ্ছে। তার ভুক্তভোগী পশ্চিমবঙ্গ। এই সরকার হৃদয়হীনদের সরকার। যেকোনও অজুহাতেই হোক তারা পরপর পশ্চিমবঙ্গে প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে। কিন্তু তাদের একটিও প্রতিনিধি দল মণিপুরে যায়নি। সেখানে আমাদের ভাই-বোনেরা মারা যাচ্ছে। তাও এই সরকারের তরফে তাদের প্রতি কোনও সহানুভূতি নেই। এবং সেই কারণেই আপনারা মণিপুরে যাননি। তবে সব বিরোধী দলগুলি কিন্তু সেখানি গিয়েছে।'