লকডাউন কি উঠিয়ে দেওয়া উচিত? যাত্রীবাহী ট্রেন কী চালানো উচিত? এই সব বিভিন্ন ইস্যুতে ভিন্ন রায় উঠে এল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে। ছয় ঘণ্টা ধরে এই ম্যারাথন বৈঠক চলে আগামী দিনের রোডম্যাপ ঠিক করার জন্য। দেশে করোনা আক্রান্ত প্রায় ৭০,০০০। মৃত দুই হাজারের ওপর। অন্যদিকে অর্থনীতির হালও খুব খারাপ। সেই পরিস্থিতিতে ১৮ তারিখ থেকে লকডাউন বৃদ্ধি করা উচিত কিনা, সেই নিয়েই বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা।
মোদী এদিনের বৈঠকে ভারসাম্যের নীতির পক্ষে জোর দেন। তিনি বলেন যে অর্থনীতিকে খোলার তারা চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন যেখানেই লকডাউনের নিয়ম মানা হয়নি, পরিস্থিতি ভালো নয়। কোনও ভাবেই যাতে গ্রামে এই রোগ না ছড়ায়, তার ওপর বিশেষ জোর দেন তিনি।
এদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফ থেকে এই জল্পনা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যে ধর্মের ভিত্তিতে করোনা রোগীর সংখ্যা তারা হিসাব করার কথা ভাবছেন। একই সঙ্গে বলা হয় যে কিছু অঞ্চলে সংক্রমণের হার খুব বেশি। সেটির ওপর আলাদা করে জোর দেওয়া দরকার।
এদিনের বৈঠকে প্রায় প্রতিটি মুখ্যমন্ত্রীই আর্থিক সাহায্যের কথা বলেন। কেউ কেউ তোলেন টেস্টিং পরিষেবা বৃদ্ধি করার কথা। প্রত্যেকের কথা শুনে মোদী বলেন যে ভারসাম্য রেখে এগোতে হবে যাতে অর্থনীতিও ধুলিসাত্ না হয় আবার করোনার বিরুদ্ধেও লড়া যায়। শুধু করোনা জোন ছাড়া বাকি জায়গায় অর্থনীতি খুলে দেওয়ার সওয়াল করেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
এদিন সুযোগ পেয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাগ উগরে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন কেন্দ্র এখনও রাজনীতি করছে। কেন শুধু বাংলাকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। বাংলায় যে লকডাউন আরও বাড়তে পারে সেই ইঙ্গিত দেন দিদি।
ট্রেন চালানোর বিরুদ্ধে বলেন তামিল নাড়ু ও তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে শুধু অত্যাবশ্যক পরিষেবার জন্য মুম্বই লোকাল চালানো উচিত বলে জানান উদ্ধব ঠাকরে। কেন্দ্রকে তিনি আধাসামরিক বাহিনী পাঠানোরও অনুরোধ করেন।
মঙ্গলবার থেকে ধাপে ধাপে ট্রেন চালু হবে। এই নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। করোনার সংক্রমণ এতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে কিছু রাজ্যের আশঙ্কা।
লকডাউন বৃদ্ধির পক্ষে এদিন রায় দেন নীতিশ কুমার ও পঞ্জাবের অমরিন্দর সিং। অনেক রাজ্য বলে যে করোনা জোন নির্ধারণ রাজ্যের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। সব মিলিয়ে ১৭ তারিখের পর লকডাউন পুরোপুরি উঠে যাবে, সেরকম কোনও বার্তা উঠে এল না এদিনের বৈঠক থেকে। বরং ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ ওঠার পথেই হাঁটবে কেন্দ্র, বলে মনে করা হচ্ছে।