রাত পোহালেই উত্তরপ্রদেশে ৫৮ আসনে প্রথম দফার ভোট পর্ব সম্পন্ন হতে চলেছে। ২০২২ সালের পাঁচ রাজ্যে ভোটপর্বের মধ্যে ৪০৩ টি আসন সম্বলিত উত্তরপ্রদেশ আলাদা করে লাইমলাইট কেড়ে নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণের আগে, সংবাদসংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উত্তরপ্রদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলেন নরেন্দ্র মোদী।
উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক আঙিনার প্রশ্ন উঠতেই 'দুই জন ছেলে'-র প্রসঙ্গ ওঠে। উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশে জোট বেঁধেছেন সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব ও আরএলডির জয়ন্ত চৌধুরী। এর আগে ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশে জোটবদ্ধ হয় অখিলেশের সমাজবাদী পার্টি ও রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস। সেই প্রসঙ্গ তুলে নরেন্দ্র মোদী বলেন, 'ইয়ে দো লড়কোওয়ালা খেল তো হামনে পেহলে ভি দেখা থা (এই দুই ছেলের খেলা তো আমরা আগেও দেখেছি)।' এরপরই মোদী বলেন, 'আর ওঁদের এতটাই অহংকার ছিল যে ওঁরা 'গুজরাতের দুই গাধা' এমন শব্দও প্রয়োগ করেছিলেন। আর উত্তরপ্রদেশের জনতা ওঁদের হিসাব দেখিয়ে দিয়েছেন। .. আর একবার তো দুই ছেলেও ছিলেন আর ওঁদের বুয়াজি (পিসি)ও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। তাতেও হাল ফেরেনি।' উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ভোটে অখিলেশ, রাহুলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী। উত্তরপ্রদেশের বুকে অখিলেশ-মায়াবতী জোট কে অনেকেই সেবার 'বুয়া-ভতিজা' জোট বলে কটাক্ষ করেছিল। মোদীর দাবি, কোনওমতে জোড়া লাগিয়ে যে জোট হয়েছিল, তাকে মেনে নিতে পারেনি উত্তরপ্রদেশ। ৫ রাজ্যে নির্বাচন শুরুর আগে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে মোদী এদিন বলেন, বিজেপিকে যেখানেই স্থায়ী সরকারে আসার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোনও প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া আসেনি। চিরকালই সেখানে প্রতিষ্ঠানের পক্ষের হাওয়া ছিল।
সাক্ষাৎকারে মোদী বলেন, গোটা দেশেই বিজেপির পক্ষে রাজনৈতিক হাওয়া রয়েছে। এক্ষেত্রে তিনি 'সবকা সাথ সবকা বিকাশ' এর তত্ত্ব তুলে ধরেন। আত্মবিশ্বাসের সুরে মোদী বলেন, ৫টি রাজ্যের সবকয়টিতেই বিজেপি জিতবে আর সরকার গড়বে। এরপরই যোগী আদিত্যনাথকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে নরেন্দ্র মোদী বলেন, উত্তরপ্রদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যখনই কথা বলেন মানুষ তখনই আগের সরকারগুলির গুণ্ডারাজ, মাফিয়া রাজ, বাহুবলীরা কীভাবে আশ্রয় পেয়েছিল তা নিয়ে আলোচনা হয়। মোদী বলেন, সেই আমলে বাড়ি থেকে মহিলারা বের হতে পারতেন না। মোদী বলেন, ' একটা সময়ছিল যখন উত্তরপ্রদেশে গুণ্ডারা যা ইচ্ছে তাই করতে পারত। এখন তারা আত্মসমর্পণ করে। নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেন যোগীজি, আর এটার সঙ্গে আপোশ করেননা।' উল্লেখ্য, পাশাপাশি সমাজবাদী পার্টিকে একহাত নিয়ে ফের একবার পরিবারতন্ত্রের কটাক্ষে বেঁধেন অখিলেশদের। সমাজবাদী পার্টিতে একই পরিবারের ৪৫ জন সদস্য পার্টির পদাধিকারী হিসাবে উঠে এসেছিলেন বলে তোপ দাগেন মোদী। পরিবারবাদকে তিনি 'ফেক সমাজবাদী' বলে আখ্যা দিয়ে কটাক্ষ শানান অখিলেশদের বিরুদ্ধে।