সপ্তর্ষি দাস
এক দেশ এক ভোট। উচ্চ পর্যায়ের কমিটি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে। মঙ্গলবার তিনি তৃণমূল, সিপিএম, সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে মিটিং করেন। কেন ওই দলগুলি এই নীতিতে আপত্তি জানাচ্ছেন তা জানার চেষ্টা করেন তিনি। তাঁদের মতামত শুনেছে কমিটি।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা এই নীতির বিরোধিতা করছেন। কারণ আসলে এই ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশনের মাধ্য়মে ভারতে একনায়কতন্ত্র চালানোর চেষ্টা করা হবে।
তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও সাংসদ সুদীপ বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এই আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের মতে এই নীতির মাধ্য়মে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে হস্তক্ষেপ করা হবে।
মিটিংয়ের পরে কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্য়ায় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ধরা যাক একটা রাজ্য সরকার পড়ে গেল। বিভিন্ন জায়গায় এটা হয়। সেখানে কীভাবে সরকার চলবে নাকি রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হবে? এক্ষেত্রে মানুষের মতামত আর থাকবে না।
এদিকে এর আগে বাংলার মুখ্য়মন্ত্রীর এই মিটিংয়ে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি শেষ মুহূর্তে সেই সফর বাতিল করেন। এরপর তিনি দুই সাংসদ যাবেন বলে জানিয়েছিলেন।
এদিকে মমতা আগেই এই নীতি মানতে চাননি। তাঁর মতে এর মাধ্যমে সংবিধানের সাধারণ পরিস্থিতিকেই ভেঙে দেওয়া হবে।
সিপিএমের তিন সদস্যের প্রতিনিধি তার মধ্যে সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, পলিটব্যুরোর সদস্য নীলোৎপল বসু ও কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মুরলীধরন ছিলেন।
ইয়েচুরি বলেন, আমাদের দল এর আপত্তি করছে। তাঁর মতে, এই নীতি ভারতের সংবিধানের পরিপন্থী। যখন কোনও সরকার ভেঙে যায় তখন তা চলতে পারে না। তিনি বলেন যখন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভারতে শুরু হয়েছিল প্রথম ভোট হয়েছিল ১৯৫২ সালে। এরপর ৫৭ সালে সেটা ভেঙে গেল কেন? কারণ রাজ্য সরকার ৩৫৬ ধারার অপপ্রয়োগের মাধ্যমে ভেঙে গিয়েছিল।
সমাজবাদী পার্টির কেকে শ্রীবাস্তব ও হরিশচন্দ্র সিং যাদব ছিলেন। তাঁদের মতে, এটা অসাংবিধানিক। একনায়কতন্ত্র স্থাপনের একটা প্রচেষ্টা।
এদিকে বাণিজ্যিক সংস্থা ফিকির দাবি, এই ধারনার মাধ্যমে যে টাকা বাঁচবে তা উন্নয়নের খাতে খরচ করা যেতে পারে। তাঁদের মতে বার বার ভোট হলে ব্যবসার ক্ষতি হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি সময় লাগে। তবে শেষ পর্যন্ত এবার কোবিন্দ কমিটির মাধ্যমে এই নীতি আসলে বাস্তবায়িত হয় কি না সেটাই দেখার।