করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে টালমাটাল গোটা দেশ। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এই অবস্থায় ধুমধাম করে বিয়ের আচার-অনুষ্ঠান প্রায় সব জায়গায় বন্ধ। বিধি লঙ্ঘন করে কোথাও বিয়ের আসর বসলেই কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। তবে পরিস্থিতি বুঝে খুব স্বল্প সংখ্যক অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতিই নেটমাধ্যমে পিপিই কিট পড়ে বিয়ের দৃশ্যও দেখেছিল গোটা দেশ। এবার আরও একটি অভিনব বিয়ের ঘটনা প্রকাশ্যে এল উত্তরপ্রদেশে, যেখানে কোনও আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব কিংবা লোকলস্কর নয়, বরযাত্রী হিসেবে একাই পৌঁছলেন হবু বরের বাবা! উলটদিকে মেয়ের বিয়ের সমস্ত আচার জাঁকজমক ছাড়াই পালন করলেন কনের মা ও ভাই। এমনকী, বরযাত্রী সামলানো থেকে শুরু করে যাবতীয় দায়িত্ব একাই কাঁধে তুলে নিলেন তাঁরা।
সোমবার এই অভিনব বিয়ের সমস্ত আচার মধ্যস্থ অঞ্চলপুরের বাসিন্দা রাজগির বাহাদুর চৌহানের তক্তাবধানে উত্তরপ্রদেশের বজিরগঞ্জ থানা সংলগ্ন দুর্গা মন্দিরে সম্পন্ন করা হয়। ওই মন্দিরের পুরোহিত অজয় কুমার সমস্ত আচার-আচরণ মেনে বিয়ে সম্পন্ন করান।
সে রাজ্যের ঢোঢিয়া পাড়ার বাসিন্দা ভগবান দত্তের ছেলে মনু দত্তের সঙ্গে পড়শি গ্রাম সাহিবপুরের বাসিন্দা রেশমি চৌহানের বিয়ে অনেক আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। এর পর দু’পরিবারের তরফে ২৭ এপ্রিল বিয়ের দিন স্থির করা হয়। বিয়ের যাবতীয় আয়োজনও সেরে ফেলেছিলেন তাঁরা। কিন্তু বাধ সাধে করোনা ভাইরাস। এরই মধ্য করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ে গোটা দেশে।
করোনার এই পরিস্থিতিতে প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন এই বিয়ের তারিখ হয়ত পিছিয়ে দিতে হবে দু’পক্ষকেই। বিষযটি জানতে পেরে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা রাজগির বাহাদুর চৌহান। তাঁর মধ্যস্থতায় দু’পক্ষই আগে যা তারিখ স্থির করেছিলেন, সেদিনেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী সোমবার সন্ধ্যায় দুর্গা মন্দিরে হবু বর মনুকে নিয়ে বরযাত্রী হিসেবে তাঁর বাবা ভগবান দত্ত একাই উপস্থিত হন।
ওদিকে কনে রেশমি তাঁর মা কৃষ্ণাবতী ও ভাই সুনীলকে নিয়ে আগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন। ওদিকে দুপুরেই পুরোহিতকেও ডেকে নেওয়া হয়। হোমকুণ্ড তৈরিই ছিল। অন্যান্য সামগ্রীও থালায় সাজিয়ে দেওয়া হয়। এর পর নির্দিষ্ট লগ্নেই বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিয়েতে এক টাকাও যৌতুক লেনদেন হয়নি। পুলিশের অনুমতি নিয়েই ওই দুর্গা মন্দিরে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।