সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের মাঝেই ‘ওয়াক আউট’ করলেন বিরোধীরা। ঘটনার পরই মোদী তাঁর ভাষণের মাঝে বলেন, ‘ওঁদের ধৈর্য নেই শোনার’। উল্লেখ্য, অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে এদিন সকাল থেকেই সংসদে হইহট্টোগোল দেখা যায়। এরপর মোদী খানিকক্ষণ বক্তব্য রাখার পরই বিরোধীরা ওয়াক আউট করেন।
এদিকে ওয়াকআউট প্রসঙ্গে সংসদের বাইরে গিয়ে বিরোধী নেতারা একের পর এক বক্তব্য রাখেন। অধীর চৌধুরী বলেন,'আমরা বের হতে বাধ্য হয়েছি কারণ, আজও প্রধানমন্ত্রী মণিপুর নিয়ে নীরব রয়েছেন।' এদিকে, এআইএমআইএমের তরফে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, ‘ গত ৯ বছরে তাঁর দেওয়া সমস্ত বক্তৃতার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদীর আজকের ভাষণটি বিরক্তিকর ছিল। আমরা ভেবেছিলাম তিনি মণিপুরকে যাঁরা সহিংসতা করছেন তাঁদের নিন্দা করবেন, আমরা ভেবেছিলাম তিনি হরিয়ানা সরকারের অভিযানের নিন্দা করবেন...কিন্তু সেখানে কিছুই হচ্ছে না। সেখানে চলছে মুঘল-ই-আজম।’ বিরোধীরা বলে,' দুর্ভাগ্যজনক যে মণিপুরে ডাবল ইঞ্জিন সরকারের ব্যর্থতার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদী দায়িত্ব নেননি। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর আমলে এত মহিলা ধর্ষিত হয়েছে, রাজ্য ভাগ হয়েছে, ৬০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছে, সাধারণ মানুষের হাতে একে ৪৭। এমন নিরাপত্তাহীন পরিবেশ তৈরি করেও তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বরখাস্ত করছেন না।' এছাড়াও তারা বলে, প্রধানমন্ত্রী ‘বলেননি কবে তিনি মণিপুর সফর করবেন...আজও তাদের কাছে স্থায়ী সমাধান নেই, মণিপুরে কবে শান্তি ফিরে আসবে তার কোনো রোডম্যাপ নেই। সমগ্র মণিপুর রাজ্য প্রধানমন্ত্রীর কথায় অসন্তুষ্ট ও দুঃখিত...তাই I.N.D.I.A. জোট ওয়াক আউট করেছে। ’
এদিকে, সংসদে কার্যত দেড় ঘণ্টা ধরে ততক্ষণে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভাষণ দিতে থাকেন মোদী। তিনি কথা প্রসঙ্গে তোলেন অর্থনীতির ইস্যু। কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে ছাড়েননি মোদী। এছাড়াও অধীর রঞ্জন চৌধুরী থেকে রাহুল গান্ধীকেও জোরালো তোপ দাগেন মোদী। এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ে তুলকালাম হতে থাকে সংসদে। তখনই সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেন বিরোধীরা। এই প্রসঙ্গে মোদী বলেন,'যাঁরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না তাঁরা সবসময় কথা বলতে প্রস্তুত, কিন্তু শোনার ধৈর্য নেই। কথা শুনিয়ে চলে যান। নোংরা ছড়ান আর ছেড়ে যান। মিথ্যা ছড়িয়ে দেন এবং চলে যান। এটা তাঁদের খেলা। এ দেশ তাঁদের কাছ থেকে বেশি কিছু আশা করতে পারে না।'
এদিকে, বিরোধীদের তরফে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বক্তব্য রাখতে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘ আপনি প্রশ্ন করছেন মণিপুরের সংসদ সদস্যরা কেন কথা বলছেন না। আপনার সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল এবং মণিপুর জ্বলছিল তখন সাংসদরা কী বলছিলেন?’ তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, শুধু সংসদ নয়, গোটা দেশের কাছে বিরোধীদের উচিত ক্ষমা চাওয়া।