পাকিস্তানের প্রাক্তন মিলিটারি শাসক জেনারেল পারভেজ মুশারফের দেহ সামরিক সম্মানে সামরিক কবরখানায় শায়িত করা হল। তাঁর শেষ বিদায়ের বেলায় পরিজনরা, প্রাক্তন সামরিক আধিকারিকরা ও কর্মরত সামরিক আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। তবে রাষ্ট্রের তরফে বিশেষ কেউ ছিলেন না।
তবে পারভেজ মুশারফের নমাজ-ই-জানেজাতে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন না। গুলমোহর পোলো গ্রাউন্ড এলাকায় এদিন একেবারে অনাড়ম্বরভাবেই কবর দেওয়া হয় জেনারেল পারভেজ মুশারফের দেহ।
তবে প্রাক্তন আইএসআই প্রধান জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত শুজা পাশা ও জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত জাহিরুল ইসলাম সহ একাধিক সেনা আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে পাকিস্তানের মুসলিম লিগের নওয়াজ নেতা আমির মুকাম, পাক তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা তথা সিন্ধের রাজ্যপাল ইমরান ইসমাইল, প্রাক্তন ফেডেরাল ইনফরমেশন মিনিস্টার জাভেদ জাব্বর উপস্থিত ছিলেন।
এদিন মুশারফের কফিন মোড়়ানো ছিল পাক পতাকা দিয়ে। তবে তাঁর শেষকৃত্যের রাষ্ট্রীয় কোনও মর্যাদা ছিল না।
প্রার্থনার পরে প্রাক্তন সেনাপ্রধানের দেহ শুইয়ে দেওয়া হয় কবরের মধ্যে। তবে এদিন তার শেষ বিদায়ের বেলাতেও সরকারের তরফে বিশেষ কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
কার্গিল যুদ্ধে প্রধান কলকাঠি যিনি নেড়েছিলেন তিনি এই মুশারফ। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের শেষ সামরিক শাসক। গত রবিবার দুবাইতে মৃত্যু হয় তার। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। ২০১৬ সাল থেকে তিনি আরব আমিরশাহিতে থাকতেন। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগের সাজা থেকে বাঁচতে তিনি কার্যত দুবাইতে অন্তরালে থাকতেন।
এদিকে স্পেশাল বিমানে দুবাই থেকে তার দেহ আনা হয় পাকিস্তানে। তার স্ত্রী সাবা, ছেলে বিলাল, মেয়ে ও অন্যান্য আত্মীয়রা দেহের সঙ্গেই বিমানে আসেন। আরব কর্তৃপক্ষ ওই বিমানের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল বলে খবর।
এদিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তার দেহ জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামানো হয়। পরে তার দেহ নিয়ে আসা হয় মালির ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়।
এদিকে এর আগে পারভেজের মাকে দুবাইতে কবর দেওয়া হয়েছিল। তার বাবাকে কবর দেওয়া হয়েছিল করাচিতেই।
এদিকে পারভেজ শেষ শ্রদ্ধা কারা জানাবেন তা নিয়ে পাক দলগুলির নেতাদের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ তৈরি হয়। এদিকে মুশারফের দেহের সামনে প্রার্থনার প্রসঙ্গ উঠতেই সেনেটের সদস্য়রা আপত্তি তোলেন। তাদের দাবি মুশারফ একনায়কতন্ত্র চালাতেন। তিনি গণতন্ত্রের বিরোধী ছিলেন। তবে কোনও মৃত ব্যক্তিকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো নিয়ে এই মতবিরোধ নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন।