বড় ধরণের অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে পাকিস্তান। পাকিস্তানি রুপির মূল্য কমেছে, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং জ্বালানি সংকটের মধ্যে পাকিস্তানকে ঋণ ছাড় দেওয়ার বিষয়ে আলোচনায় বসতে ইসলামাবাদ পৌঁছেছেন আইএমএফের কর্মকর্তারা। আগামী অক্টোবরের ভোটে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ঋণের জন্য আইএমএফের দেওয়া শর্তগুলোর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। ঋণ পেতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল পাকিস্তানকে কর বৃদ্ধি, ভর্তুকি হ্রাস-সহ বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দেয়।
ডলার কালোবাজারির লাগাম টেনে ধরতে দেশীয় মুদ্রার উপর নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে দেয় পাকিস্তান সরকার। এই পদক্ষেপের ফলে পাকিস্তানি অর্থের রেকর্ড মূল্য কমেছে। কৃত্রিমভাবে সস্তা পেট্রোলের দামও অনেক বাড়ানো হয়। বিশ্বব্যাংকের প্রাক্তন অর্থনীতিবিদ আবিদ হাসান বলেন, পাকিস্তানের পিঠ দেওয়া ঠেকে গিয়েছে। এখন সরকারকে ঋণ নিতে আইএমএফের শর্ত পূরণের জন্য রাজনীতিকে আম জনতার হাতে ছেড়ে দিতে হবে। যদি সরকার সেটা না করে তবে পাকিস্তান দেউলিয়া হয়ে যাবে। পাকিস্তানের পরিণতি হবে শ্রীলঙ্কার মতো অথবা তার চেয়ে খারাপ।
শ্রীলঙ্কা গত বছর দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে এবং কয়েকমাস ধরে খাদ্য এবং জ্বালানি ঘাটতিতে পড়ে। যার ফলে বিক্ষোভ শুরু করে মানুষ। শ্রীলঙ্কার নেতামন্ত্রীরা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। আজ মঙ্গলবার আইএমএফ কর্মকর্তারা পাকিস্তান সফরে এসেছেন। এই সফর এমন একটি সময়ে হচ্ছে যখন বন্যায় পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা ডুবে হয়ে আছে।
পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ পাকিস্তানের কাছে আর মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যয় মেটানোর মতো বিদেশি মুদ্রার মজুত রয়েছে। এমন মুহূর্তে পাকিস্তানের সামনে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য এবং ওষুধ আমদানি করার কোনও বিকল্প রাস্তা নেই। আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় এবং রুপির মূল্য কমায় কারখানাগুলো বন্ধ হচ্ছে। নির্মাণের কাজগুলো থেমে আছে, পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ এবং দেশের আভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ নেই বললেই চলে।
উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, খাওয়ার জিনিসের অত্যধিক দাম, মানুষের জীবনযাত্রার খরচ মেটানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে দিনকে দিন। সেই দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সুবিধের নয় এখন। আগামী অক্টোবরে ভোট। এমন অবস্থায় পাকিস্তান সরকার কোন পথে হাঁটবে সেটাই বড় প্রশ্ন।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: প্রতিবেদনটি চ্যানেল আই থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)