পাঁচটি রাজ্যে অপমানজনক পরাজয়ের পর থেকেই কংগ্রেসের অন্দরে ডামাডোল অব্যাহত। এই আবহে রবিবার টানা দ্বিতীয় দিনে কংগ্রেস নেতৃত্ব এবং সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কেসি বেণুগোপালের বিরুদ্ধে কেরলের অনেক জায়গায় পোস্টার দেখা গেল। কোঝিকোড় এবং কান্নুর এলাকায় পোস্টার দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। এর আগে, রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি কে সুধাকরন দলের নেতাদের সতর্ক করেছিলেন যাতে শীর্ষ নেতাদের বিচ্ছিন্ন করতে এবং তাদের সমালোচনা করতে সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে কেউ কিছু পোস্ট না করে। তবে সেই সতর্ক বার্তায় কাজ দিচ্ছে না। দলের অন্দরের অসন্তোষ ক্রমেই বাইরে প্রকাশ পাচ্ছে।
এদিকে বেণুগোপালের বিরুদ্ধে পোস্টার দেখা যাওয়ার পরে বিভক্ত হয়েছে কংগ্রেস। রাহুল ঘনিষ্ঠ নেতার অনুগামীরা সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বেণুগোপালের ছবি পোস্ট করতে শুরু করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এদিকে রমেশ চেন্নিথালা এবং ওমেন চান্ডির মতো কেরল কংগ্রেসের অনেক সিনিয়র নেতা এই পরাজয়কে একটি অস্থায়ী ধাক্কা বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে দল ঘুরে দাঁড়াবে। সেই কাজ করার যথেষ্ট শক্তি রয়েছে দলের কাছে।
যদিও রাজ্য নেতাদের একাংশ মনে করেন যে ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে সংগঠনে যে সাম্প্রতিক পরিবর্তন হয়েছিল, তার পিছনে ছিলেন বেণুগোপাল। এর আগে কেরলেও ২০২১ সালে সংগঠনের বিশাল রদবদল হয়েছিল। তাদের অভিযোগ, এই রদবদলই দলের সমীকরণ বদলে দিয়েছে। যদিও পঞ্জাব সহ বেশ কিছু রাজ্যে কিছুদিন ধরেই রাজ্য ইউনিটগুলিতে অন্তর্দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে পড়েছিল। এদিকে কেরলের রাজ্যের শীর্ষ নেতারা গান্ধী পরিবারের প্রতি অনুগত ছিলেন দীর্ঘদিন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কংগ্রেসের অন্দরে সমীকরণ দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে।
এদিকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কেরলে বড় জয় পেয়েছিল কংগ্রেস। এই রাজ্যের ২০টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১৯টিতে জিতেছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কেরলে লাল ঝড়ে উড়ে যায় কংগ্রেস। এরপর কেরলের সাংগঠনিক স্তরেও বড় রদবদল হয়। বর্ষীয়ান নেতাদের সরিয়ে দেওয়া হয় গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে। এই আবহে এবারে কেরলে কংগ্রেসের অন্দরেও ক্রমেই অসন্তোষ বাড়ছে। তা বাইরে প্রকাশও পাচ্ছে এবারে।