গত শুক্রবার বালাসোরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনার ৫১ ঘণ্টা পর অভিশপ্ত লাইন দিয়ে ফের ছুটতে শুরু করেছে ট্রেন। বাহানগা স্টেশন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরুর মুহূর্তে সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন রেলমন্ত্রী। করজোরে প্রণাম করেন অশ্বিনী। এরপর মুখোমুখি হন সাংবাদিকদের। রেলমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, দায়িত্ব এখনও শেষ হয়নি। অশ্বিনী বলেন, 'যে সব পরিবার এখনও তাদের প্রিয়জনদের খোঁজ পাননি, তারা যাতে তাড়াতাড়ি তাদের খুঁজে পেতে পারেন তা নিশ্চিত করাই এখন আমাদের লক্ষ্য। আমাদের দায়িত্ব এখনও শেষ হয়নি।' উল্লেখ্য, এখনও অধিকাংশ মৃতদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এই আবহে ওড়িশার রাজ্য সরকার বিশেষ পজক্ষেপও করেছে। রেলও শনাক্তকরণে এবার সাহায্য করবে বলে জানালেন রেলমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, এখনও বহু মৃতদেহ শনাক্ত করা যায়নি। তাই সেগুলির ময়নাতদন্ত হয়নি। পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগও করা যায়নি। আবার গত দু'দিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বালাসোরের একাধিক ছবি, ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। কোনওটাতে দেখা যাচ্ছে, কামলার তলায় চাপা পড়ে আছেন কেউ বা কারও হাত ঝুলছে। আবার কোনও ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে যে শোকস্তব্ধ ব্যক্তিরা এক এক করে চাদর সরিয়ে মৃতদেহের মুখ দেখছেন, যদি তাদের প্রিয়জন সেখানে থেকে থাকেন। এই আবহে যে সব দেহ এখনও শনাক্ত হয়নি, সেই দেহগুলির ছবি প্রকাশ করেছে ওড়িশা সরকার।
জানা গিয়েছে, এখনও শতাধিক মৃতদেহ চিহ্নিত করা যায়নি এবং তাদের পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এই আবহে মৃতদেহগুলি সরিয়ে ফেলা হচ্ছে বালাসোর থেকে। সেই মৃতদেহগুলি ভালো ভাবে সংরক্ষণ করার জন্যই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ওড়িশা সরকার। জানা গিয়েছে, এই মৃতদেহগুলিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভুবনেশ্বরে। সেখানকার বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের মর্গে সংরক্ষণ করে রাখা হবে এই দেহগুলিকে। এদিকে ওড়িশা সরকারের প্রকাশিত ছবি দেখে কেউ যদি নিজের মৃত প্রিয়জনকে শনাক্ত করতে পারেন, তাহলে ১৯২৯ হেল্প ডেস্ক নম্বরে ফোন করতে বলা হয়েছে।
এর আগে বাহানগা হাই স্কুল এবং উত্তর ওড়িশা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির একটি অস্থায়ী মর্গে রাখা হয়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতদের দেহগুলিকে। সেখান থেকে গতকালই শনাক্ত না হওয়া দেহগুলি নিয়ে যাওয়া হয় ওড়িশার রাজধানীতে। এদিকে ওড়িশা সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আরও একদিন সংরক্ষিত অবস্থায় রাখা থাকবে দেহগুলি। তার মধ্যে মৃতদের পরিজনরা যদি ভুবনেশ্বরে এসে হেদ শনাক্ত করতে না পারেন, তাহলে ওড়িশা সরকারই নিয়ম মাফিক সেই দেহগুলির সৎকার করবে। এদিকে ইতিমধ্যেই যেসব মৃতদেহ শনাক্ত হয়েছে, সেগুলির ময়নাতদন্ত হচ্ছে। এরপর সেই দেহ পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।