প্রায় সময় শোনা যায় ভারতীয় রেলের লোকসানের খবর। কিন্তু এবার ভারতীয় রেলের জন্য এলো সুখবর। দেশজুড়ে ভারতীয় রেল শিশুদের ভ্রমণ বাবদ অতিরিক্ত ২৮০০ কোটি টাকা আয় করল। হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন, এই বিপুল অংকের টাকা শুধুমাত্র শিশু যাত্রীদের ভাড়া বাবদ সংগ্রহ করেছে ভারতীয় রেল ওয়ে। একটা সময় পর্যন্ত শিশুদের ভ্রমণের জন্য অর্ধেক টিকিটের টাকা দিলেই চলত। কিন্তু বিগত সাত-আট বছর ধরে ভারতীয় রেল ভ্রমণরত বাচ্চাদের টিকিটের সম্পূর্ণ দাম নেওয়ার ফলে এই বিশাল পরিমাণ লাভ হল রেল বিভাগের। রেল কর্তৃপক্ষ নিজেরাই তথ্য প্রকাশ করেছে যে, মাত্র ৭ বছরে ভারতীয় রেলের কোষাগারে ২৮০০ কোটি ঢুকেছে। আগের অর্থবর্ষ অর্থাৎ ২০২২-২৩ সময়কালে শিশুদের টিকিট বাবদ সব থেকে বেশি লাভ হয়েছে রেলের।
একটি আরটিআই-এর ভিত্তিতে সেন্টার ফর রেলওয়ে ইনফরমেশন সিস্টেম জানিয়েছে, শিশুদের প্রাপ্তবয়স্কদের সমান রেল ভাড়া নেওয়ার বিষয়টা চালু হয় সাত বছর আগে। এর ফলে ২,৮০০ কোটি টাকা আয় করেছে দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রীয় পরিষেবা ক্ষেত্র। রেল পরিসংখ্যান প্রকাশ করে জানিয়েছে যে, গত বছর সবথেকে বেশি ৫৬০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে এই ক্ষেত্রে। এর আগের নিয়মে ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী বাচ্চাদের রেলের আলাদা বেড বেছে দিলেও তাদের থেকে মাত্র অর্ধেক টিকিটের মূল্য নেওয়া হত। কিন্তু, রেল বিভাগ এই নীতি সংশোধন করে ৩১শে মার্চ ২০১৬ তারিখ থেকে।
এটা স্পষ্ট করা হয়েছে যে, যেসকল শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই সিট বা বেড পেতে চায়, তাদের টিকিটের সম্পূর্ণ মূল্য দিতে হবে। আর যে সকল শিশুরা আলাদা সিট বা বেড চায় না, তবে তাদের টিকিটের অর্ধেক টাকা দিলেই যথেষ্ট। এই নতুন নিয়মের ফলে ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল থেকে রেল বিভাগ শিশুদের আলাদা বার্থের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অর্থ নিতে শুরু করে। আর এর ফলেই অনেকটা পরিমাণ বেড়ে যায় রেলের আয়ের পরিমাণ। ২০১৬-১৭ থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত সাতটি আর্থিক বছরে ১০ কোটি শিশু টিকিটের পুরো ভাড়া দিয়ে আলাদা বার্ড বা সিটে যাতায়াত করেছে বলে জানিয়েছে রেল বিভাগ আর অন্যদিকে মাত্র ৩.৬ কোটি শিশু অর্ধেক টিকিটের মূল্য দিয়ে ভ্রমণ করেছে। অর্থাৎ প্রায় ৭০ শতাংশ শিশুই টিকিটের পুরো ভাড়া দিয়ে ভ্রমণ করেছে। ভারতীয় রেলে যাতায়াতের জন্য এই নতুন নিয়মের ফলে রেলের আয় অনেকটাই বেড়েছে।