কাশ্মীরের রাজৌরিতে জঙ্গি দমন অভিযান চলাকালীন শহিদ হলেন পাঁচজন জওয়ান। তবে এই অভিযানে খতম হয়েছে দুই লস্কর জঙ্গিও। নিহত জঙ্গিদের মধ্যে একজন হল কোয়ারি। এই কোয়ারি লস্করের কমান্ডার পদে ছিল। গেরিলা যুদ্ধ কৌশলে পটু ছিল সে। কোয়ারি পাকিস্তানি নাগরিক বলে জানা গিয়েছে। বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে সে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল। আইইডি বিস্ফোরণে সিদ্ধহস্ত ছিল এই কোয়ারি। স্নাইপার হিসেবেও সে বেশ দক্ষ ছিল। ধংরি এবং কান্দিতে যে জঙ্গি হামলা হয়েছিল, তার মাস্টারমাইন্ড ছিল এই কোয়ারি। তার সঙ্গে এই অভিযানে মৃত্যু হয়ে তার সহযোগীরও। (আরও পড়ুন: গুরুদ্বারে নিহঙ্গ শিখদের সাথে সংঘর্ষ পুলিশের, নিহত এক কনস্টেবল, জখম ৫)
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১ এবং ২ জানুয়ারি ধংরিতে জঙ্গি হামলা চালানো হয়েছিল। সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাতজনকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিল। এদিকে রাজৌরির কান্দি জঙ্গলে গত ৫ মে সেনা জওয়ানদের ওপর হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। সেই হামলায় শহিদ হয়েছিলেন পাঁচজন জওয়ান। এই আবহে সেনার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মৃত লস্কর কমান্ডারকে পাকিস্তান থেকে কাশ্মীরে পাঠানো হয়েছিল রাজৌরিকে নতুন করে অশান্ত করে তুলতে এবং এখানে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বৃদ্ধি করতে।
আরও পড়ুন: 'অবাক হয়েছিল ভারত...', খলিস্তানি জঙ্গিকে হত্যার ছক প্রসঙ্গে বলল আমেরিকা
এদিকে কোয়ারিকে খতম করার পর তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে সেই এলাকায় আরও কোনও জঙ্গি লুকিয়ে আছে কি না, তা খতিয়ে দেখে তল্লাশি অভিযান চালায় সেনা ও পুলিশের যৌথ বাহিনী। এদিকে রাজৌরির এনকাউন্টারে বৃহস্পতিবারও একজন সেনা জওয়ানের মৃত্যু হয়। এর জেরে এই ঘটনায় মোট শহিদ জওয়ানের সংখ্যা বেড়ে ৫ হয়। তাঁদের মধ্যে দু'জন অফিসার। শহিদ পাঁচজন হলেন - কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালোরের ক্যাপ্টেন এমভি প্রাঞ্জল, উত্তরপ্রদেশের আগ্রার ক্যাপ্টেন শুভম গুপ্ত, পুঞ্চের অজোটের হাভিলদার আবদুল মজিদ, উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালের হলি পদলির বাসিন্দা ল্যান্স নায়েক সঞ্জয় বিস্ত এবং উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের নাগালিয়া গিউরোলোর প্যারাট্রুপার সচিন লাউর।
আরও পড়ুন: ঘুষে বিমান নেওয়ার অভিযোগ, সাসপেন্ড করা হল DGCA-এর বিভাগীয় ডিরেক্টরকে
এদিকে জানা গিয়েছে, এই এনকাউন্টারটা হয় রাজৌরির কালাকোটে। গত রবিবার কালাকোটে প্রয়াত এক ধর্ম প্রচারকের বাড়িতে দেখা যায় এই দুই জঙ্গিকে। সেখানে কিছু খাবার চাইতে গিয়েছিল তারা। এরপর গত মঙ্গলবার শরফরাজ আহমেদ নামক এক যুবককে মারধর করতে দেখা যায় এই দুই জঙ্গিদের। জানা গিয়েছে, সেই যুবকের থেকে খাবার চেয়েছিল কোয়ারি এবং তার সহযোগী। তবে তাদের খাবার দিতে অস্বীকার করায় শরফরাজকে মারধর করা হয়। এরপর সেই শরফরাজই নিরাপত্তা বাহিনীকে এই জঙ্গিদের খোঁজ দেয়। এর আগে গত সপ্তাহে রাজৌরিতে এক জঙ্গিকে খতম করেছিল সেনা। তার আগে সেপ্টেম্বরেও পরপর দু'দিনে দুই জঙ্গিকে খতম করা হয়েছিল রাজৌরিতে। ক্রমেই জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়ছে এই জেলায়।