ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই ভারতের বিদেশ নীতি নিয়ে অনেক ইউরোপীয় দেশ প্রশ্ন তুলেছে। 'নরমে গরমে' চাপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে আমেরিকাও। তবে ভারত নিজের অবস্থানে অনড় থেকে শান্তির বার্তা দিয়ে গিয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘে একবারও ভোট দেয়নি ভারত। তবে ভোটদান থেকে বিরত থাকলেও প্রতিবারই ভারত মনে করিয়ে দিয়েছে, শান্তির পথে ফিরতে আলোচনার কোনও বিকল্প নেই। তবে শান্তি ফেরেনি। বিভাজন আরও বেড়েছে। আমেরিকার মিত্র রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে রাশিয়ার দূরত্ব আরও বেড়েছে। তবে ভারত এখনও দুই পক্ষের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। এই আবহে বিশ্ব শান্তি রক্ষার ক্ষেত্রে ভারতের গুরু দায়িত্বের কথা তুলে ধরলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। সম্প্রতি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু কলেজের পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জয়শংকর বলেন, 'বিভাজিত বিশ্বকে এক করার দায়িত্ব ভারতের।' তাঁর এই বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
পড়ুয়াদের উদ্দেশে জয়শংকর বলেন, 'ভারত এই জি২০-র সভাপতিত্ব খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়ে পেয়েছে। আমরা এমন এক সময়ে জি২০-র সভাপতি হয়েছি, যখন গোটা বিশ্ব নানান চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। তা সে ভালো স্বাস্থ্য পরিষেবা হোক, জলবায়ু পরিবর্তন হোক, ভালো মানের শিক্ষা হোক, পানীয় জল, পুষ্টির অভাব, জ্বালানির ঘাটতি... অনেক সমস্যার সামনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।' এরপর জয়শংকর আরও বলেন, 'বিশ্ব এখন দুই মেরুতে বিভাজিত। একদিকে আছে উন্নত দেশগুলি। অন্যদিকে আছে উন্নয়নশীল দেশগুলি। আর ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে এই মেরুকরণ পূর্ব ও পশ্চিমের আকারণ ধারন করছে। তবে আমরা মধ্যিখানে আছি। তাই এটা আমাদের দয়িত্ব যে বিশ্বকে ফের একসঙ্গে একজোট করা।'
জয়শংকরের কথায়, 'ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্বে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর জেরে জ্বালানির মূল্য বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। খাদ্যশস্য থেকে সারের দাম বেড়েছে। এর জেরে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি প্রভাবিত হয়ে পড়েছে। তবে এমন এক সময়ে গোটা বিশ্ব ভারতকে সম্মানের চোখে দেখছে। আমাদের দেশের সরকার, প্রশাসন, অর্থনীতি, প্রযুক্তি এবং স্বাধীন বিদেশ নীতি অনেকের নজর কেড়েছে। আমরা এই কারণেই দ্রুত কোভিডের ধাক্কা সামলে ফের সঠিক ট্র্যাকে ফিরতে পেরেছি।' এরপর জয়শংকর বলেন, 'কয়েক বছর পর যখন ২০২৩ সালের দিকে ফিরে তাকাবে, তখন তোমরা বুঝবে যে ২০২৩ সালটি ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। জি২০-র সভাপতিত্ব বিশ্বে আমাদের জন্য একটি বিশেষ স্থান তৈরি করেছে।' জয়শংকর আরও বলেন, 'আগামী ২৫ বছরে ভারত উন্নত দেশে পরিণত হবে। এবং তার জন্য যুব সমাজকে অবদান রাখতে হবে।'