জার্মানির লাইপসিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা একটি এনজাইম খুঁজে পেয়েছেন, যেটি রেকর্ড সময়ে প্লাস্টিক ধ্বংস করতে পারে৷ ১৬ ঘণ্টায় পিইটি প্লাস্টিকের ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ধ্বংস করতে পারে এটি৷
তবে এই প্রক্রিয়া কার্যকর করতে একে ৬০ থেকে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করতে হয়৷ লাইপশিস বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট ক্রিস্টিয়ান জনেনডেকারের দল বিশ্বাস করে, প্লাস্টিক সমস্যা সমাধানের মূল চাবিকাঠি হতে পারে বায়োটেকনোলজি৷ তিনি বলেন, ‘প্রকৃতি কীভাবে কাজ করে সেটা আমরা দেখি, এবং তারপর সেটা কপি করি৷ প্রকৃতি এনজাইম ব্যবহার করে পলিমার ধ্বংস করে৷ আমরাও সেটাই করছি৷'
লাইপশিসের অন্যতম এক প্রধান কবরস্থানের কম্পোস্টের স্তূপে এই এনজাইম খুঁজে পেয়েছিলেন তাঁরা৷ জনেনডেকার বলেন, ‘পাতায় মোমের আবরণের মতো কিছু থাকে৷ কিউটিন পলিয়েস্টারের কারণে এমনটা মনে হয়৷ কিউটিন একটি পলিমার, যা এস্টার বন্ধনীর মাধ্যমে তৈরি হয়৷ পিইটিও তাই৷ অনেক বায়োপ্লাস্টিকের ক্ষেত্রেও বিষয়টা এমন৷ এনজাইম বিভিন্ন ধরনের পলিয়েস্টার চিনতে ও ভেঙে ফেলতে পারে- যা একটা সুবিধা৷ প্লাস্টিক সমস্যার একটা বায়োলজিক্যাল সমাধান পেয়ে আমরা খুশি৷'
এনজাইম কত দ্রুত কাজ করে, সেটা আমাদের দেখান জনেনডেকার৷ ৬০ থেকে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকলে একদিনে পিইটি প্যাকেট পুরো ধ্বংস হয়ে যায়৷ অবশিষ্ট থাকে শুধু কিছু বিল্ডিং ব্লক৷ ভাগ্যক্রমে এনজাইমটি পেয়েছিলেন গবেষকেরা৷
জনেনডেকার জানান, ‘আমরা এর নাম দিয়েছি পিএইচএল-সেভেন৷ এর মানে হচ্ছে, পলিয়েস্টার হাইড্রোলেজ লাইপশিস৷ আর সেভেন দেওয়ার কারণ, ৯টি এনজাইমের মধ্যে সাত নম্বরটি সবচেয়ে ভালো কাজ করেছে৷'
জনেনডেকারের দল এখন পরবর্তী ধাপে কাজ করছে৷ তারা এনজাইমের ডিএনএ পরিবর্তন করতে চান, যেন এটি আরও দ্রুত প্লাস্টিক খেয়ে ফেলতে পারে৷ এজন্য তারা অনেকগুলো পরিবর্তন নিয়ে কাজ করছেন৷ প্রতিটি সংস্করণ তারা আলাদাভাবে পরীক্ষা করে দেখছেন৷ এভাবে তাঁরা পরবর্তী গবেষণার জন্য সবচেয়ে কার্যকরটি বাছাই করছেন৷
তাঁরা আধুনিক প্রযুক্ত ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তারও সহায়তা নিচ্ছেন৷ গবেষকেরা প্রতিদিন হাজার হাজার এনজাইম পরীক্ষা করে সুপার এনজাইমের খোঁজ করছেন৷ প্লাস্টিক বর্জ্য টেকসইভাবে রিসাইক্লিং করতে তাঁরা বড় লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন৷
(বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)