পূর্ব লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তে গুলি চলেছে। তবে তা ভারত চালায়নি। বরং চিনা সেনাই গুলি চালিয়েছে। মঙ্গলবার স্পষ্ট করে দিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
অর্থাৎ ৪৫ বছর পর আবারও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গুলি চালানো হয়েছে। শেষবার চিন সীমান্তে গুলি চলেছিল ১৯৭৫ সালের অক্টোবরে। তখন নয়াদিল্লি জানিয়েছিল, সীমান্ত অতিক্রম করে অরুণাচল প্রদেশের তুলুং লা এলাকায় ভারতীয় সেনা টহলদারি বাহিনীর হামলা চালায় চিনা সেনা। সেই ঘটনায় চার ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল।
সোমবার মধ্যরাত পেরিয়ে চিন অভিযোগ করে, ভারতীয় সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করেছে প্যাংগং সো লেকের দক্ষিণ প্রান্তে। চিনের সরকারের মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস সোমবার রাতে লাল ফৌজের পশ্চিম থিয়েটার কম্যান্ডের মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে বলেন যে ভারতীয় সেনা ফের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করেছে শেনপাও পাহাড়ের কাছে প্যাংগং সো লেকের দক্ষিণ কূলে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী সতর্কতামূলক গুলিও চালায় বলে দাবি করেছে চিনা সেনা। গ্লোবাল টাইমস বলেছে যে চিনা সীমান্ত রক্ষীরা বাধ্য হয় পালটা পদক্ষেপ নিতে পরিস্থিতি সুস্থির করার জন্য। এই ঘটনার আর কোনও বিস্তারিত বিবরণ এখনও মেলেনি। তবে চিন কী ধরনের 'পালটা পদক্ষেপ' করেছে, তা জানানো হয়নি।
তবে গুলি চালানোর মতো সীমান্ত অতিক্রম করার অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, কোনও সময় ভারতীয় সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করেনি বা কোনও রকম আক্রমণাত্মক পন্থা ব্যবহার করেনি। বরং চিনা সেনা আগ্রাসী মনোভাব নিয়েছিল বলে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত ২৯-৩০ অগস্ট থেকেই প্যাংগংয়ের দক্ষিণ অংশে ঝামেলা শুরু হয়েছে। চিনের উস্কানিমূলক কার্যকলাপ রোখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত। তবে নয়াদিল্লি স্পষ্ট জানিয়েছে যে তারা এলএসি অতিক্রম করেনি। ভারতের দিকেই যথাপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
কয়েকদিন আগেই মস্কোতে রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বৈঠক হয়েছিল। দশ তারিখ হবে বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক। তার আগেই ফের প্যাংগংয়ে ঝামেলা লাগল। মে মাস থেকেই লাদাখে চলছে দুই পক্ষের মধ্যে অচলাবস্থা। এর মধ্যেই গালওয়ানে ১৫ জুুনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় ও অজানা সংখ্যক চিনা সেনা নিহত হন। মাঝে পরিস্থিতি একটু থিতিয়ে গেলেও ফের নতুন করে বিতর্কের আঁচ বাড়ছে।