প্রয়াত বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আহমেদ পাটেল। শোকের ছায়া হাত শিবিরে। বুধবার কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধী প্রবীণ নেতা আহমেদ পাটেলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে তিনি এক অপরিবর্তনীয় কমরেড, বিশ্বস্ত সহকর্মী এবং একজন বন্ধুকে হারিয়েছেন, যিনি তাঁর সম্পূর্ণ জীবন দলের প্রতি নিবেদন করেছিলেন।
করোনা আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে পড়ে রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ পাটেলে। বুধবার ভোর সাড়ে ৩টের সময় গুরগাঁওয়ের এক হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক উপদেষ্টাকে হারিয়ে শোকবার্তায় সোনিয়া গান্ধী লিখেছেন, ‘আমি এক সহকর্মী হারিয়েছি যাঁর পুরো জীবন কংগ্রেস পার্টির প্রতি নিবেদিত ছিল। তাঁর মধ্যে এমন কিছু বিরল গুণ ছিল যা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে। যেমন, সর্বদা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন তিনি। উল্লেখযোগ্য, কর্তব্যের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি।’
সোনিয়া গান্ধী আরও লিখেছেন, ‘আমি এক অপরিবর্তনীয় কমরেড, বিশ্বস্ত সহকর্মী এবং একজন বন্ধুকে হারালাম। আমি তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছি এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’
শোক প্রকাশ করেছেন রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা। টুইটারে শোক জানিয়ে রাহুল লিখেছেন, ‘এটি একটি দুঃখের দিন। আহমেদ পাটেল ছিলেন কংগ্রেস দলের স্তম্ভ। দলই তাঁর কাছে সব কিছু ছিল। দলের সবচেয়ে কঠিন সময়ে তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে ছিলেন। এক অসাধারণ সম্পদকে আমরা হারালাম। আমরা তাঁর অভাব গভীরভাবে অনুভব করব। ফয়জল, মমতাজ ও তাঁর পরিবারের প্রতি আমার ভালবাসা এবং সমবেদনা জানাই।’
প্রিয়াঙ্কার কথায়, ‘আমাদের দলের প্রতি তাঁর পরিষেবা এবং প্রতিশ্রুতি ছিল অফুরন্ত। তিনি শুধু অভিজ্ঞ এক সহকর্মী ছিলেন না, যাঁর কাছে আমি প্রতিনিয়ত পরামর্শের জন্য যেতাম, তিনি ছিলেন খুব কাছের এক বন্ধু যিনি আমাদের সবার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁর প্রয়াণ এক বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি করেছে।’
বর্ষীয়ান নেতা আহমেদ পাটেলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন পি চিদাম্বরম, দিগবিজয় সিং, অভিষেক মনু সিংভি এবং মনীশ তিওয়ারির মতো কংগ্রেস নেতারা। পি চিদাম্বরম বলেছেন, ‘আহমেদ পাটেল সত্যিকার অর্থে বন্ধু ছিলেন। দল এবং তাঁর সহকর্মীদের প্রতি অনুগত ছিলেন তিনি। সর্বদা অন্যকে সাহায্য করতে প্রস্তুত থাকতেন ধর্মনিরপেক্ষ এই নেতা। আমাদের সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলি ধরে রাখতে শেষ পর্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছেন তিনি।’
শোকার্ত মনীশ তিওয়ারি টুইটে লিখেছেন, ‘১৯৮৪ সালের মে মাসে আহমেদ পাটেলের সঙ্গে আমার প্রথমবার দেখা হয়। বছরের পর বছর ধরে আমাদের মধ্যে এক সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমি কখনওই ভাবিনি যে ৩৬ বছর পর এভাবে টুইট করে আমাকে শোক প্রকাশ করতে হবে।’ মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগবিজয় সিং আহমেদ পাটেলকে ‘প্রতিটি রাজনৈতিক রোগের ওষুধ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
টুইটে দিগবিজয় সিং লিখেছেন, ‘এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধু এবং নির্ভরযোগ্য সহচর চলে গেলেন। সেই ১৯৭৭ সাল থেকে আমরা দু’জনে একসঙ্গে ছিলাম। তিনি লোকসভায় পৌঁছেছিলেন আর আমি বিধানসভায়। সমস্ত কংগ্রেস সদস্যের কাছে তিনি ছিলেন প্রতিটি রাজনৈতিক রোগের ওষুধ। সর্বদা হাসিখুশি থাকতে স্নিগ্ধ, কৌশলী এই নেতা।’ যেভাবে একের পর এক মূল্যবান জীবন করোনার গ্রাসে চলে যাচ্ছে তা দেখে কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিংভি সকলকে সতর্ক থাকতে বলেছেন।