সব মুসলিম পাবলিক ট্রাস্টকেই এক দৃষ্টিতে দেখা ঠিক হবে না। আজ এমনই পর্যবেক্ষণ করল সুপ্রিম কোর্ট। ইসলাম প্রচারকারী প্রতিটি দাতব্য ট্রাস্ট বম্বে পাবলিক ট্রাস্ট অ্যাক্ট, ১৯৫০ এবং ওয়াকফ অ্যাক্ট, ১৯৯৫-এর অধীনে বাধ্যতামূলকভাবে ওয়াকফ কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে বুধবার আদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত এই প্রসঙ্গে বলে, ‘ওয়াকফ সম্পত্তি সম্পর্কিত ইস্যুটি আইনের অধীনে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। যদি বম্বে পাবলিক ট্রাস্ট অ্যাক্টের অধীনে নিবন্ধিত কোনও পাবলিক ট্রাস্ট প্রকৃতপক্ষে ওয়াকফ হয়ে থাকে এবং সেটি যদি ট্রাস্ট অ্যাক্টের ২৮ নং ধারার অধীনে অন্তর্ভুক্ত না হয়ে থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে তাদের কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়াকফ আইনের অধীনে আসা উচিত। তবে সব নিবন্ধিত মুসলিম পাবলিক ট্রাস্টকেই যে ওয়াকফ হতে হবে, এমনটা নয়।’
এর আগে ২০১১ সালে বম্বে হাই কোর্ট মহারাষ্ট্র ওয়াকফ বোর্ডের সংবিধানকে খারিজ করে রায় দিয়েছিল। বলা হয়েছিল, রাজ্যে শিয়া এবং সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সংখ্যা নিয়ে সমীক্ষা চালাতে হবে। সেই সমীক্ষা সম্পন্ন হলেই নতুন ভাবে ওয়াকফ বোর্ড স্থাপিত হবে। ততদিন রাজ্যের সব মুসলিম দাতব্য ট্রাস্ট বম্বে পাবলিক ট্রাস্ট অ্যাক্টের আওতায় থাকবে। ২০১১ সালে দেওয়া উচ্চ আদালতের সেই রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মহারাষ্ট্র ওয়াকফ বোর্ড। বিচারপতি কেএম জোসেফ এবং জাস্টিস ঋষিকেশ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়।
এই আবহে শীর্ষ আদালত নিজেদের রায়তে বলে, ‘এই আদালত একটি পাবলিক ট্রাস্ট এবং ওয়াকফের মধ্যে পার্থক্যকে বহাল রেখেছে৷ এটা সম্পূর্ণভাবে সেই সংশ্লিষ্ট মুসলিম ব্যক্তির উপর ছেড়ে দেওয়া হবে যে তিনি ট্রাস্টের পথ বেছে নেবেন নাকি ওয়াকফের মাধ্যমে সমর্পণের পথ বেছে নেবেন। ট্রাস্টের ধারণাটি মুসলিমদের কাছে অজানা নয়, ওয়াকফকেও একটি ট্রাস্ট হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। একটি ট্রাস্টকে চিরস্থায়ী হতে হয় না এবং কিছু শর্তের অধীনে সেই ট্রাস্ট ভেঙে দেওয়া যেতে পারে। অন্তত বম্বে পাবলিক ট্রাস্টস অ্যাক্টের অধীনে কোনও ট্রাস্টের সম্পত্তি বিক্রি করা অনুমোদিত। যদিও শুধুমাত্র চ্যারিটি কমিশনারের পূর্ববর্তী অনুমোদনেই তা করা যায়। ওয়াকফের ক্ষেত্রে উৎসর্গ করা সম্পত্তি সর্বশক্তিমানের নামে হস্তান্তর করা হয় এবং আইনে অনুযায়ী এটি বিক্রি করা যায় না।’