কলকাতা হাইকোর্টের জাঁদরেল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার এই জনপ্রিয় বিচারপতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্রনেতা সুদীপ রাহা। ইতিমধ্যেই বিচারপতির চেয়ারে বসে রাজনৈতিক নেতাদের মতো মন্তব্য করা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। সেখানে ছাত্রনেতার অভিযোগ, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর আসনকে কলুষিত করছেন। সর্বোচ্চ আদালতের কাছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতার আর্জি সংবিধানের ১২৪(৪) ধারা প্রয়োগ করা হোক। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।
এদিকে সম্প্রতি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, রাজ্য সরকার কতদিন এভাবে মামলা চালিয়ে যান দেখব। নিজের এই মন্তব্যের জেরে নানা সময়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ২০২৩ সালে একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার পর্যন্ত দেন তিনি। যা নিয়ে তুমুল সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিচারপতি এ কাজ করতে পারেন কি না, সেই প্রশ্ন ওঠে। সেখানে তাঁর বলা একাধিক মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয় বঙ্গে। ওই টিভি চ্যানেলেই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
অন্যদিকে এখানেই শেষ হচ্ছে না বিচারপতির কাণ্ডকারখানা। কখনও নাম করে, কখনও নাম না করে নানা সময় একাধিক ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদেরকে আক্রমণ করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলে অভিযোগ। এমনকী সম্প্রতি সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে এজলাসে ফেটে পড়েন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সরাসরি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে গুলি চালানোর কথা বলেছিলেন। ইঙ্গিত দিয়ে বুঝিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কথা। আর সুদীপ রাহার দাবি, মু্খ্যমন্ত্রীর লেখা কবিতাকে নিয়েও বিচারপতি ব্যঙ্গ করেছেন। নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের হয়ে কথা বলার অভিযোগ করা হচ্ছে বিচারপতির বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: ‘তাজপুর বন্দর নিয়ে কেন্দ্রের আগ্রহ আছে’, বাংলায় এসে বড় ইঙ্গিত জাহাজমন্ত্রীর
এছাড়া একাধিক ইস্যু তুলে ধরে এবার তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র নেতা সুদীপ রাহা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কবে, কোথায় তৃণমূল কংগ্রেসকে নাম করে বা ইঙ্গিতে আক্রমণ করেছেন, কী বলেছেন—সমস্ত কিছু অভিযোগপত্রে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন সুদীপ রাহা। তাঁর দাবি, পরিকল্পনা করেই তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করছেন বিচারপতি। অন্য রাজনৈতিক দলের হয়ে সুর চড়াতে দেখা যাচ্ছে। যা বিচারপতি হিসেবে কখনই কাম্য নয়। সর্বোচ্চ আদালতের পদক্ষেপের অপেক্ষায় সুদীপ রাহা–সহ গোটা দল।