নয়া সদস্য আসবে। সেজন্য মুসলিম পরিবারে দক্ষিণ ভারতীয় রীতিতে সাধ অনুষ্ঠান নিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করেছিল তানিশক। আর ‘লাভ জিহাদের’ অভিযোগে সেই বিজ্ঞাপনের উপর চটে যায় নেটিজেনদের একাংশ। বিজ্ঞাপন বয়কটের দাবি তোলা হয়। চাপের মুখে সেই বিজ্ঞাপন প্রত্যাহারের পথে হাঁটল গয়না প্রস্তুতকারক সংস্থা।
গত ৯ অক্টোবর তানিশকের তরফে ৪৫ সেকেন্ডের একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। ‘একতবাম’-র (একতা) বার্তা দিয়ে সেই বিজ্ঞাপনে দেখানো হয়, চিরাচরিত দক্ষিণ ভারতীয় রীতি মেনে অন্ত্বঃসত্ত্বা বৌমার সাধ ভক্ষণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে একটি মুসলিম পরিবার।
বিজ্ঞাপনটি সামনে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই দাঁত-নখ বের করে চলে আসে নেটিজেনদের একাংশ। সেই বিজ্ঞাপনে নাকি ‘লাভ জিহাদ’-কে মহিমান্বিত করা হয়েছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা যে শব্দের প্রচলন করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, ভালোবাসার আড়ালে হিন্দু মেয়েদের ধর্মান্তকরণ করেন মুসলিমরা। একইসঙ্গে ‘ভুয়ো’ ধর্মনিরপেক্ষতা এবং একটি নির্দিষ্ট ধর্মের সম্প্রদায়ের বিশ্বাসে 'আঘাত' করায় তানিশকের সমালোচনা শুরু হয়। টুইটারে শুরু হয় #BoycottTanishq ট্রেন্ডিং।
তবে অনেকেই সেই বিজ্ঞাপনের ভূয়ষী প্রশংসা করেন। যেভাবে সেই বিজ্ঞাপনে দু'ধর্মের মানুষের মধ্যে বন্ধন তুলে ধরা হয়েছে, তা প্রকৃত ভারতের ধারণার সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে জানান অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। স্পষ্টভাষায় তিনি বলেন, ‘যদি হিন্দু-মুসলিমের একতা ওদের এতটাই বিব্রত করে, তাহলে কেন ওরা বিশ্বে সবথেকে বেশিদিন ধরে হিন্দু-মুসলিমের ঐক্যের প্রতীক ভারতকে বয়কট করছে না?’
বিজ্ঞাপনটি যেভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, তাতে মুগ্ধ হয়েছেন বিশেষজ্ঞরাও। তাঁদের বক্তব্য, সেই বিজ্ঞাপন কর্মসূচিতে কোনও ভুল নেই। সম্পর্ককে অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যদিও শেষপর্যন্ত সেই বিজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে নিয়েছে তানিশক। তবে গয়না প্রস্তুতকারক সংস্থার তরফে সরকারিভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
তবে সেই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত আশাহত হয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ‘ব্যাং ইন দ্য মিডল’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং মুখ্য কৌশল নির্ধারিক আধিকারিক বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে কয়েকটি ট্রোল এবং ধর্মান্ধের সামনে মাথা নত করল তানিশক। আমার কাছে এটা ২০২০ সালের অন্যতম সেরা বিজ্ঞাপন।’