বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > সূর্যের চেয়ে লক্ষ লক্ষ গুণ বড়! বিশাল ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পেল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ

সূর্যের চেয়ে লক্ষ লক্ষ গুণ বড়! বিশাল ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পেল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ

সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের সন্ধান পেল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ (NASA)

জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দ্বারা সবচেয়ে দূরবর্তী সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের আবিষ্কার এখনও পর্যন্ত মানুষের বুদ্ধিমত্তা এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাধনার প্রমাণ। এই আবিষ্কারটি মহাজাগতিক বিবর্তন সম্পর্কে আমাদের নতুন অনেক তথ্য দেবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। 

সম্প্রতি জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের হাত ধরে ফের একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার করলেন জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা। তাঁরা মহাবিশ্বে দেখা সবচেয়ে দূরবর্তী সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের ছবি প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে। এই বিশাল ব্ল্যাক হোলটি আমাদের সূর্যের ভরের ৯০ মিলিয়ন গুণ বলে অনুমান করা হচ্ছে। মহাবিস্ফোরণের ৫৭০ মিলিয়ন বছর পরে এটি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, যে সময়কাল মহাজাগতিক ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য সময়পর্ব।

ব্ল্যাক হোলটি সিইইআরএস ১০১৯ গ্যালাক্সির মধ্যে অবস্থিত, যেখানে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আরও দুটি ছোট ব্ল্যাক হোল সনাক্ত করেছেন। এই ব্ল্যাক হোলদুটি যথাক্রমে বিগব্যাং মহাজাগতিক ঘটনার ১ বিলিয়ন এবং ১.১ বিলিয়ন বছর পরে গঠিত হয়েছিল। সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল একটি স্বতন্ত্র ধরনের ব্ল্যাক হোল, যা গ্যালাক্সির কেন্দ্রোয় অংশে অবস্থান করে। এই সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলগুলি অবিশ্বাস্য ভরযুক্ত হয়, যা আমাদের সূর্যের ভরের লক্ষ লক্ষ গুণ বেশি। সিইইআরএস ১০১৯-এর মধ্যে আবিষ্কৃত ব্ল্যাক হোলটির সঙ্গে আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রে অবস্থিত ব্ল্যাক হোলের কিছু মিল রয়েছে, যার ভর প্রায় ৪.৬ মিলিয়ন সৌর ভর। অস্টিনের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের রেবেকা লারসন এই আবিষ্কারের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি এই দূরবর্তী ব্ল্যাক হোলকে আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কাছাকাছি ব্ল্যাক হোলের সঙ্গে তুলনা করে উৎসাহ প্রকাশ করেছিলেন। 

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ, NASA, ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ESA) এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি (CSA)-এর যৌথ উদ্যোগে নির্মিত একটি টেলিস্কোপ। এটি মহাবিশ্ব সম্পর্কে জানাবোঝার ক্ষেত্রে বিপ্লবী এক প্রচেষ্টা৷ কিন্তু কী এই সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল? সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল হল রহস্যময় এক প্রকার ব্ল্যাক হোল যা ছায়াপথের কেন্দ্রস্থলে অবস্থান করে, এটির মহাকর্ষীয় টান অত্যন্ত বেশি হয়। ছায়াপথের বিবর্তন এবং মহাজাগতিক ঘটনাক্রম বোঝার জন্য এই ব্ল্যাক হোলের গঠন এবং বৃদ্ধির প্রক্রিয়া উদঘাটন করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই দূরবর্তী সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের আবিষ্কার এই মহাজাগতিক বিষয়ে প্রাথমিক বোঝাপড়া গড়ে তোলার এক বিরল সুযোগ করে দিয়েছে।

জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দ্বারা সবচেয়ে দূরবর্তী সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের আবিষ্কার এখনও পর্যন্ত মানুষের বুদ্ধিমত্তা এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাধনার প্রমাণ। এই আবিষ্কারটি মহাজাগতিক বিবর্তন সম্পর্কে আমাদের নতুন অনেক তথ্য দেবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এই সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের যাবতীয় তথ্য বিশ্লেষণ করে মহাজগত সৃষ্টি ও বিবর্তনের জটিল সমীকরণ সমাধিত হয় কিনা, অপেক্ষায় গোটা দুনিয়ার অনুসন্ধিৎসু মানুষেরা। 

বন্ধ করুন