আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে এফ-১৬ ইস্যুতে কড়া ভাষায় নিজের মতামত ব্যক্ত করেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বের দাম প্রসঙ্গে আমেরিকাকে ‘সতর্কবার্তা’ দিয়েছেন জয়শঙ্কর। এরপরই আমেরিকা বলে, ‘ভারত ও পাকিস্তানের পারস্পরিক সম্পর্ক নিজের জায়গায়, আমেরিকার সঙ্গে এই দুই দেশের বন্ধুত্বের সম্পর্ক অন্য জায়গায়।’
উল্লেখ্য, আজই পাকিস্তানি বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিনকেন। এরপরই ভারত-পাকিস্তানের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে আমেরিকা এই মত প্রকাশ করে। আজকে মার্কিন-পাকিস্তান সম্পর্ককে ‘স্থিতিশীল’ বলে অভিহিত করেন ব্লিনকেন। ব্লিনকেন আরও জানান, ভারতের সঙ্গে দায়িত্বশীল সম্পর্কের গুরুত্ব সম্পর্কে ভুট্টোর সঙ্গে আলোচনা হয় তাঁর।
এদিকে মার্কিন-পাক সম্পর্ক নিয়ে জয়শঙ্করের মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘উভয় দেশের সঙ্গেই আমাদের অংশীদারিত্ব রয়েছে। কিন্তু এই সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হয়ে থাকে। আমরা উভয় দেশকেই অংশীদার হিসাবে দেখি। অনেক ক্ষেত্রেই আমদের স্বার্থ এক।’ নেড প্রাইস আরও বলেন, ‘আমরা এটাও দেখতে চাই যে এই দুই প্রতিবেশী দেশ যাতে একে অপরের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক স্থাপন করে।’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের অগস্ট মাসে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সৈন্য প্রত্যাহারের পর থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে ওয়াশিংটনের। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ক্রমেই রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে শুরু করেন। তিনি অনেক ক্ষেত্রে মার্কিন বিরোধী মন্তব্য করতে থাকেন। আইএসআই-এর মাধ্যমে তালিবানকে সাহায্য করে পাকিস্তান। ইমরানের সরকার প্রকাশ্যে তালিবানি শাসনের পক্ষে সওয়াল করে। তবে ইমরান খানের সরকারের পতনের পর থেকেই আমেরিকা-পাকিস্তানের সম্পর্কের উন্নতি হতে থাকে। এই সময় ইমরান খান তাঁর সরকারের পতনের জন্য আমেরিকাকে দায়ী করেন। তবে এরই মাঝে পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থে আমেরিকা ৪৫০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন দিয়েছে আমেরিকা। এবং আমেরিকার এই অনুদানে অসন্তুষ্ট ভারত। এই আবহে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্কের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে মরিয়া আমেরিকা।