বাংলা নিউজ >
ছবিঘর > একটা ফুটকি দেখেছিলাম-কীভাবে বিক্রম ল্যান্ডারের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেলেন চেন্নাইয়ের শান
একটা ফুটকি দেখেছিলাম-কীভাবে বিক্রম ল্যান্ডারের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেলেন চেন্নাইয়ের শান Updated: 03 Dec 2019, 01:38 PM IST HT Bangla Correspondent বিক্রম ল্যান্ডারকে পাওয়া গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোররাতে এই খবর জানাল নাসা। আসলে পাওয়া গিয়েছে বিক্রমের ধ্বংসাবশেষ, তাও এক ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারের সাহায্যে। তাবড় তাবড় বিজ্ঞানীরা যখন বিক্রমের খোঁজ পান নি, তখন নেহাতই শখে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চা করা শন্মুগা সুব্রমনিয়ন ওরফে শান চিহ্নিত করলেন ধ্বংসাবশেষ। 1/5 নাসার লুনার অরবিটার রিকনয়সেন্স অরবিটার ক্যামেরা (এলআরওসি) থেকে পাঠানো ছবি থেকে বিক্রম ল্যান্ডারের ধ্বংসাবেশ খুঁজে পেলেন শান। এই ছবিগুলি নাসার বিজ্ঞানীরা দেখে বুঝতে পারেননি, কিন্তু শানের পাঠানো বার্তার পর তারা চাঁদের ওই জায়গাটি আবার খতিয়ে দেখেন। এর পরে নাসা নিশ্চিত হয়ে যে শানের দেখানো জায়গাতেই সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখ পড়েছিল বিক্রমের ধ্বংসাবশেষ। 2/5 কীভাবে উদ্বুদ্ধ হলেন তিনি এরকম ভাবে বিক্রমকে খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে? শান জানান যেখানে নাসাও পারছে না, সেটাকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছিলেন তিনি। যেখানে বিক্রম ল্যান্ড করার কথা ছিল, তার থেকে উত্তর দিকের যাবতীয় ছবি রাতের পর রাত ধরে দেখতে থাকেন শন্মুগা। পুরোনো ছবি ও বর্তমান চাঁদের ছবি মিলিয়ে মিলিয়ে দেখতে দেখতেই একটা ফুটকি খুঁজে পান তিনি, যেটা আগে ছিল না। ছবি-সৌজন্যে নাসা 3/5 যেখানে ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছে, সেটিকে শন্মুগার নামে S রেখেছে বিজ্ঞানীরা। প্রায় নয় বছরের ছবি ঘেঁটে এই জায়গাটি খুঁজে বার করেন শান। তারপরেই নাসাকে যোগাযোগ করেন তিনি। এলআরও প্রজেক্ট সায়েন্টিস্ট নোয়া পেট্রো আইএনএস-কে জানান যে শানের দেওয়া তথ্যের পর তারা ওই জায়গাটিকে ভালো করে নজরদারি করেন। ওখানে আলোর পরিস্থতি একটু ভালো হওয়ার পর অরবিটার আরও ভালো মানের ছবি পাঠাতে সক্ষম হয়েছিল। সেগুলি দেখে কোথায় বিক্রম ক্র্যাশ করেছিল এবং তাঁর ধ্বংসাবশেষ, দুটিই খুঁজে পান তারা। ক্র্যাশ সাইটটি 70.8810AoS, 22.7840AoE, তে অবস্থিত, সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ৮৩৪ মিটার ওপরে। ছবি-নাসা 4/5 তাঁর এই কাজে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন শান। অনেক সময় তিনি ভুল পথে চলে যাচ্ছিলেন এই কাজে, যখন সোশ্যাল মিডিয়া তাঁকে সাহায্য করেছিল, বলে জানান চেন্নাইয়ের টেকি। এর মধ্যে সিজি বাস্সা নামে এক ডাচ জ্যোতির্বিজ্ঞানীর অবদান মনে করতে ভোলেননি শান। বাস্সাই প্রথম বলেন যে চাঁদের উত্তর গোলার্ধ অতিক্রম করে গিয়েছে বিক্রম। সেই থেকে শান হিসাব করেন যে যেখানে অবতরণ করার কথা ছিল বিক্রমের, তার এক কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে সে। তাই সেই স্থান থেকে দুকিলোমিটারের মধ্যে খোঁজ শুরু করেন শান। 5/5 মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার শান এখন আইটি সেক্টরে কাজ করেন।কাজের ফাঁকে অ্যাপস ও ওয়েবসাইট বানান তিনি। ছোটোবেলা থেকেই তাঁর রকেটে উত্সাহ। কোনও রকেট উত্ক্ষেপণ তিনি দেখা মিস করেন না। এরপর কলেজের সময় থেকে মহাকাশযাত্রা নিয়ে চর্চা শুরু করেন তিনি। নাসার অর্বিটার যে তথ্য পাঠায়, উত্সাহী ছা্ত্রদের ও বিজ্ঞানীদের সেগুলিকে ব্যবহার করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তাঁর আবিষ্কার নবীন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দেবে, এমনই আশা রাখেন তিনি। এমন কেউ যে পেশাগত ভাবে জ্যোতির্বিজ্ঞানের চর্চা করেন না, মহাকাশের বিভিন্ন রহস্য উন্মেচনে তাঁরাও অবদান রাখতে পারেন, তিনি সেটা দেখিয়ে দিতে পারলেন, এটাই পরম পাওনা জানান শান।