ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল অভিযান শেষ। তবে বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের একমাত্র আশা, ভরসা এখন মোহনবাগান এসজি। তাদের নিয়েই লিগ শিল্ড জয়ের স্বপ্ন বুঁদ বাংলার ফুটবল আনুরাগীরা। মোহনবাগানের কাছে লিগশিল্ড জয়ের সহজ, সরল সমীকরণ হল, বাকি দুই ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নেওয়া।
এই দুই ম্যাচের প্রথম ম্যাচটি বৃহস্পতিবার কান্তিরাভায় বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে খেলতে নামবে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। এই ম্যাচটি জিততে পারলে, লিগের শেষ ম্যাচে মুম্বই সিটি এফসি-কেও হারাতে হবে। তা হলেই লিগ শিল্ড জিতবে হাবাস ব্রিগেড। তবে এর মধ্যে একটি ম্যাচ হারলে সব আশা শেষ হয়ে সবুজ-মেরুনের। তাই এই ২টি ম্যাচই বাগানের সামনে এখন ফাইনাল।
তবে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচ দু'টি খেলতে নামার আগে বাগানের চিন্তা বাড়িয়েছেন স্বয়ং দলের কোচ আন্তোনিয়ো লোপেজ হাবাস। সূত্রের খবর, নিউমোনিয়া হয়েছে বাগান কোচের। জ্বর পুরোপুরি সারছে না। তবে সরকারি ভাবে ক্লাবের পক্ষ থেকে এখনও কিছুই জানানো হয়নি। গোটা বিষয়টি গোপন রাখা হচ্ছে। মোহনবাগান ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে সহকারী কোচ ম্যানুয়েল পেরেজ এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে হাবাস বেঙ্গালুরু ম্যাচেও বেঞ্চে থাকবেন না। তাঁকে ছাড়াই বেঙ্গালুরু উড়ে গিয়েছে দল। চেন্নাই ম্যাচে তাঁর অনুপস্থিতিতেই হারতে হয়েছে মোহনবাগানকে। তার পর পাঞ্জাব এফসি-র বিরুদ্ধে কোনওক্রমে জয়। বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে কিন্তু চ্যালেঞ্জটা সহজ হবে না।
যদিও সুনীল ছেত্রীরা প্লে অফে ওঠার কোনও সুযোগ নেই। তবে বেঙ্গালুরুর ডেরায় গিয়ে তাদের হারানোটাও সহজ কাজ হবে না হাবাসহীন বাগানের জন্য়। হাবাসের ডেপুটি ম্যানুয়াল পেরেজ কলকাতা ছাড়ার আগে বলে গিয়েছেন, ‘আমাদের হয় লড়াই করতে হবে, নয়তো পালিয়ে যেতে হবে। তাই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। কোচ থাকলে অবশ্যই ভালো হতো, তবে উনি অসুস্থ থাকায় আমাদের এই ভাবেই চালাতে হবে। আশা করছি, উনি দ্রুত সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরবেন। আমরা নিয়মিত কোচের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। কোচের কথা মতো চলছি। পরামর্শ মেনেই চলা হচ্ছে। সবটাই কোচের নির্দেশ অনুযায়ী হচ্ছে। আমরা শুধু এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’
আরও পড়ুন: ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গান, অনর্গল হিন্দি বলেন, বিদেশি হয়েও এই দেশের প্রতি এত টান কেন রয় কৃষ্ণের?
ওড়িশাকে হারিয়ে লিগ শিল্ডের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গিয়েছে মুম্বই। এক ম্যাচ বেশি খেলে বাগানের সঙ্গে পাঁচ পয়েন্টের পার্থক্য। শেষ ম্যাচ ড্র করলেই চলবে তাদের। মুম্বইয়ের জয়ে কি বাড়তি চাপ সবুজ মেরুন শিবিরের উপর? ম্যানুয়ালের দাবি, ‘চাপ একই। তিন দিন আগেও একই ছিল। দিল্লির বিরুদ্ধে জিতেছি। এবার লক্ষ্য বেঙ্গালুরু। চাপ সবেতেই থাকে। এটা আলাদা কিছু না। আমাদের লক্ষ্য বেঙ্গালুরু থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে ফেরা।’
প্রতিপক্ষকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে বাগান শিবির। তার প্রধান কারণ, বেঙ্গালুরুতে একাধিক জাতীয় দলের ফুটবলার আছে। বিশেষ করে সুনীল ছেত্রী। ভারত অধিনায়কের ভূয়সী প্রশংসা করেন বাগানের সহকারী কোচ। এছাড়াও উইলিয়াম, হার্নান্দেজের মতো বিদেশিরা আছে। তবে ম্যানুয়েলের দাবি, তাঁরা জানে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে কীভাবে খেলতে হয়।
আরও পড়ুন: রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে রিয়াল-সিটির ড্র, বায়ার্নের কাছে ঘরের মাঠে আটকে গেল আর্সেনালও
হাবাসের ডেপুটির দাবি, ‘আমাদের সব ম্যাচ জিততে হবে। চাপ একটাই। ট্রফি জয়ের চাপ। তার মধ্যে খেলাটা উপভোগ করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য প্রত্যেক ম্যাচে ক্লিনশিট রাখা। আমাদের বাকি দু'টি ম্যাচ জিততেই হবে। কঠিন পরিস্থিতি। তবে আমরা জয়ের জন্যই ঝাঁপাব।’
আইএসএলে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে মোট আটবার। তার মধ্যে পাঁচ বারই জিতেছে মোহনবাগান, একবার বেঙ্গালুরু জিতেছে এবং একটি ম্যাচে ড্র হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে দ্বিতীয় লিগ ডাবলের লক্ষ্য নিয়ে নামবে মোহনবাগান। সেপ্টেম্বরে প্রথম লেগে তারা ১-০ জিতেছিল তারা। শেষ পাঁচটি অ্যাওয়ে ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে বাগান ব্রিগেড। চারটিতে জিতেছে, একটিতে ড্র করেছে। এই পরিসংখ্যানগুলিই এখন তাতাচ্ছে দিমিত্রি পেত্রাতোসদের।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।