১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাব ভারতীয় ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে আইকনিক এবং সফল। তবে আর্থিক সমস্যার কারণে ক্লাবটি বেশ টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে চলেছে। আর আর্থিক দুরাবস্থার কারণে মাঠের ফলাফলেও প্রভাব ফেলেছে।
অতিমারির পর থেকে লাল-হলুদকে অনেক সমস্যার মধ্যে যেতে হয়েছে। তার মধ্যে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করে তোলার চেষ্টা হয়েছে। যে কারণে আর্থিক দুরাবস্থা কাটাতে ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য দেবব্রত সরকার ওরফে নিতু সরকারের নেতৃত্বে ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তারা এক বছরের মধ্যে ৬ কোটি টাকার লক্ষ্যে পৌঁছতে ক্রাউডফান্ডিংয়ের জন্য জনসাধারণের কাছে আবেদন করেছিলেন।
আরও পড়ুন: সাদিও মানের জোড়া গোল, সেনেগালের বিরুদ্ধে জয় অধরা ব্রাজিলের, প্রীতি ম্যাচে হারল ৪-২-এ
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ক্রাউডফান্ডিং একটি পদ্ধতি হিসেবে জনপ্রিয় হয়েছে। যেখানে ক্লাবগুলি বিভিন্ন উদ্দেশ্যে অর্থ সংগ্রহের জন্য এটি ব্যবহার করে। কিন্তু ভারতীয় ফুটবলে এটা প্রথম।
দু'দিন আগে, একটি স্থানীয় দৈনিকে এক বিজ্ঞাপনে ক্লাবের তরফে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং একটি QR কোড ভাগ করে নিয়েছে এবং অনুরাগীদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, ক্লাবকে যে কোনও পরিমাণ অনুদান দেওয়ার জন্য। এবং একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে সেই তথ্য বিশদে শেয়ার করার আহ্বান জানিয়েছে।
ক্লাবের কর্মকর্তারা তহবিল সংগ্রহের জন্য উত্তরবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসম, এমন কী বাংলাদেশেও যাচ্ছেন। নীতু সরকার প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘আমরা ভিক্ষা করতে এসেছি এবং আমরা আবারও ভক্তদের কাছে তাদের ভালোবাসা জানাতে অনুরোধ করছি। আমরা যে পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করব, সেটা আমাদের ক্লাবের উন্নয়নে এবং তৃণমূল স্তরের উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে পারব। যদি এমন কোনও উদ্বৃত্ত পরিমাণ থাকে, প্লেয়ার সই করাতেও সেটা ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ক্লাবের পারফরম্যান্সের উন্নতিতেও সাহায্য করতে পারে।’
নীতু সরকার দাবি করেছেন, ‘ইস্টবেঙ্গলের লক্ষ লক্ষ ভক্ত রয়েছে। তাদের অনেকেই প্রায়শই আমাদের বলেছেন যে, আপনাদের ক্ষমতা ব্যবহার করুন এবং আমাদের কাছ থেকে সাহায্য নিন। ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা ৫ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাই আমরা তাদের কাছ থেকে এক কোটির বেশি অর্থ সংগ্রহের আশা করছি। এটি ছাড়াও ভক্তরা আমাদের ১০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত যা খুশি সাহায্য করতে পারে। বিনিময়ে আমরা তাদের একটি শংসাপত্র দেব এবং প্রতিটি টাকার হিসেব রাখা হবে।’
ইস্টবেঙ্গলের এই ক্রাউডফান্ডিংয়ের বিষয়টিতে মোটেই সন্তুষ্ট নন বাইচুং ভুটিয়া। তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘ক্লাবের অবশ্যই অর্থের প্রয়োজন। তবে এরকম উদ্যোগ রীতিমতো বিভ্রান্তিকর। ইস্টবেঙ্গলের এই মুহূর্তে ইনভেস্টর রয়েছে। তার পরেও ক্রাউডফান্ডিংয়ের কী প্রয়োজন, তা আমার বোধগম্য নয়।’
লাল-হলুদের ঘরের ছেলে মেহতাব হোসেন আবার এই বিষয়ে ক্লাবের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘একজন প্রাক্তন খেলোয়াড় হিসেবে আমি অবশ্যই ক্লাবের পাশে দাঁড়াবো। এবং আমি যে ভাবে পারি, তাতে অবদানও রাখব। প্রতিটি সামান্য সাহায্যও গুরুত্বপূর্ণ। তাই অনুগ্রহ করে বলব, ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাবকে সমর্থন করার জন্য আপনি যা করতে পারেন, সেই সাহায্যই করুন। যাতে সকলে মিলে আমরা এই আইকনিক ক্লাবটিকে বাঁচাতে পারি এবং নিশ্চিত করতে পারি যে, এটি বছরের পর বছর ধরে ভালো ভাবে চলবে।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।