শুভব্রত মুখার্জি:- আসন্ন ইউরো কাপের কোয়ালিফায়ার ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, রোমানিয়া, সুইজারল্যান্ডের মতো ইউরোপীয় শক্তিধর দেশগুলো। যেখানে ফ্রান্স নজির গড়া জয় তুলে নিয়েছে।এমবাপের দুরন্ত হ্যাটট্রিকে ইউরো কাপের কোয়ালিফায়ারে সবথেকে বেশি গোলের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। এছাড়াও নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড এবং রোমানিয়া মূলপর্বের ছাড়পত্র জোগাড় করে ফেলেছে। মূলপর্বের ছাড়পত্র জোগাড় করার দোড়গোড়াতে পৌঁছে গিয়েছে ক্রোয়েশিয়াও।
ভূমধ্যসাগরকে আটলান্টিক মহাসাগরের সঙ্গে সংযোগকারী প্রণালি হিসেবেই বিখ্যাত হয়েছে জিব্রাল্টারের নাম। স্পেনের দক্ষিণে রয়েছে জিব্রাল্টার দেশ। যা এখনও ব্রিটেনের অধীনস্থ। সেই জাতীয় দলই গত রাতে ফ্রান্সের বিপক্ষে গড়েছে লজ্জার নজির। ফ্রান্সের কাছে ১৪ গোল খেয়েছে জিব্রাল্টার!প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে এটাই ইউরোপের কোনও দলের সবচেয়ে বেশি গোলে জয়ের রেকর্ড। এর আগে ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় জয়টি ছিল ১৩-০ ব্যবধানে। সেই জয় এসেছিল ২০০৬ সালে।সেবার সান মারিনোর বিপক্ষে জিতেছিল তারা। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ১৯৮ নম্বরে থাকা দলটির বিপক্ষে গোলবন্যার বইয়ে দিয়েছে ফ্রান্স। ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছেন অধিনায়ক কিলিয়ান এমবাপে। হ্যাটট্রিক করে কেরিয়ারে ৩০০ গোলের মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন এমবাপে। পাশাপাশি ৪৬ গোল করে এমবাপে এখন ফ্রান্সের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। তাঁর ওপরে আছেন শুধু থিয়েরি অঁরি (৫১) ও সতীর্থ অলিভিয়ের জিরু (৫৬)।
এছাড়াও ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন কিংসলে কোমান ও অলিভিয়ের জিরু। একটি করে গোল করেছেন উসমান দেম্বেলে, মার্কাস থুরাম, আদ্রিয়ান রাবিও, ওয়ারেন জাইরে-এমেরি, জোনাথান ক্লাউস এবং ইউসুফ ফোফানা। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে হয় প্রথম গোল। জিব্রাল্টারের ইথান সান্তোস আত্মঘাতী গোল করে বসেন।এই ম্যাচেই জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছে পিএসজি মিডফিল্ডার জাইরে-এমেরির। ১৭ বছর বয়সী এই তরুণই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্সের হয়ে খেলা সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার।
ফ্রান্সের রেকর্ডের রাতে কোয়ালিফাই করেছে নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড এবং রোমানিয়া। ইজরায়েলের নেশন্স লিগের রেকর্ডের কারণে তারা সরাসরি যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। তবে নরওয়ে এবং তাদের তারকা স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ডের ইউরো খেলার এবারের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে মূলপর্বে ওঠার দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গিয়েছে ক্রোয়েশিয়াও। নেদারল্যান্ডসকে কোয়ালিফাই করতে গেলে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে জিততেই হত। তাদের স্ট্রাইকার ওট ওয়েগহর্স্ট দলকে ১২ মিনিটে লিড দেন। গোলার মতো একটি শট তিনি টপ কর্ণার দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন। এরপর ম্যাচে নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ডের জাল লক্ষ্য করে ১৭ টি শট নেয়। সেখানে আয়ারল্যান্ড নেয় মাত্র ৩ টি শট। তবে গোল করতে পারেনি কোনও দল। ফলে ১-০ গোলে ম্যাচটা জিতে মূলপর্বের ছাড়পত্র পায় নেদারল্যান্ডস।
অন্যদিকে, কসোভোর সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে ইউরোর মূলপর্বে খেলা নিশ্চিত করে সুইজারল্যান্ড। ২০১২ সাল থেকে টানা এই নিয়ে তারা সবকটি বড় টুর্নামেন্টে কোয়ালিফাই করতে সমর্থ হল। ম্যাচের প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকে। দ্বিতীয়ার্ধে ৪৭ মিনিটে হেডে গোল করে সুইজারল্যান্ড দলকে লিড এনে দেন রুবেন ভার্গাস। ৮২ মিনিটে ম্যাচে সমতা ফেরায় কসোভো। গোল করেন মুহামেত হাইসেনি। ম্যাচ শেষ পর্যন্ত ড্র অবস্থায় শেষ হয়। সুইজারল্যান্ডের শেষ ছয় ম্যাচে এটি পঞ্চম ড্র।এই সবকটি ম্যাচেই তারা আশি মিনিটের পরে অন্ততপক্ষে একটি গোল হজম করেছে।
অন্যদিকে রোমানিয়া তাদের ম্যাচে জিতে যাওয়ার ফলে সুইজারল্যান্ড অটোমেটিক কোয়ালিফাই করে গিয়েছে। রোমানিয়া ২-১ গোলে ইজলায়েলকে হারিয়ে দিয়েছে। ফলে তারাও কোয়ালিফাই করে গিয়েছে। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে ইজরায়েলের ইরান জাহাবি গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। এরপর জর্জ পুসকাস এবং ইয়ানিস হাজি গোল করে রোমানিয়ার জয় নিশ্চিত করেন। ম্যাচটি ইজরায়েল বনাম হামাস লড়াইয়ের কারণে খেলা হয় হাঙ্গেরিতে। ২০১৬ সালের পরে কোনও বড় টুর্নামেন্টে কোয়ালিফাই করল রোমানিয়া। নেশন্স লিগে ভালো পারফরম্যান্স করার কারণে অটোমেটিক কোয়ালিফাই না করলেও প্লে অফে চলে গেল ইজরায়েল। অন্যদিকে বেলারুশ ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে অ্যান্ডোরাকে।
ক্রোয়েশিয়া অপর ম্যাচে লাটভিয়াকে হারিয়ে দিয়েছে ২-০ গোলে। অন্যদিকে ওয়েলস ১-১ গোলে ড্র করেছে আর্মেনিয়ার সঙ্গে। ক্রোয়েশিয়ার হয়ে লোভরো মায়ের এবং আন্দ্রেজ ক্রামারিচ গোল করেন ম্যাচে। ক্রোয়েশিয়া,আর্মেনিয়াকে পরের ম্যাচে হারালেই অথবা তুরস্কের কাছে ওয়েলস হেরে গেলেই সরাসরি ইউরোর মূলপর্বে চলে যাবে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।