বলিউড সুপারস্টার সলমন খানের বান্দ্রার বাসভবনে গুলি চালানোর ঘটনায় প্রথমদিন থেকেই নড়েচড়ে বসেছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। এবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অব অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যাক্ট (MCOCA)-এর ধারা প্রয়োগ করল মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ। এই মামলায় এখনও পর্যন্ত চার অভিযুক্তকে গ্রেপফার করা হয়েছে, যার মধ্যে দু'জন শ্যুটার এবং অপর দু'জন অস্ত্র সরবরাহকারী। গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই এবং তার ভাই আনমোল বিষ্ণোইকে ওয়ান্টেড হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আরও পড়ুন-মৃত্যুর হুমকিকে বুড়ো আঙুল! পুলিশের জালে বন্দুকবাজরা, দুবাইতে খোশমেজাজে কার সঙ্গে সময় কাটছে সলমনের?
এক পুলিশ আধিকারিক , 'বিষ্ণোই ভাইদের নেতৃত্বাধীন সংগঠিত অপরাধ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার ভিত্তিতে আমরা এমসিওসিএ-র বিভিন্ন ধারা প্রয়োগ করেছি। ক্রাইম ব্রাঞ্চ জেলবন্দি গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।
১৪ এপ্রিল ভোর ৪টা ৫৫ মিনিট নাগাদ অজ্ঞাতপরিচয় দুই বাইক আরোহী গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টে পাঁচ থেকে ছয় রাউন্ড গুলি চালায়। অভিনেতা এবং তাঁর বাবা-মা সেইসময় বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন, এবং এই ঘটনায় কেউ আহত হয়নি। ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ভাই আনমোল বিষ্ণোই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টের মাধ্যমে হামলার দায় স্বীকার করেন। সঙ্গে ভাইজানকে সতর্ক করে বলেন, ‘সলমন খান, আমাদের হালকাভাবে নেবেন না। এটাই প্রথম ও শেষ সতর্কবাণী। এর পর আপনার বাড়িতে গুলি চালানো হবে।’
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, আনমোল বিষ্ণোইয়ের পোস্টটি করা হয়েছে পর্তুগালের একটি ইন্টারনেট প্রোটোকল (আইপি) অ্যাড্রেস থেকে। তাদের সন্দেহ, বিষ্ণোই ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তার আসল লোকেশন লুকিয়ে রাখে এবং বার্তাটি পোস্ট করার জন্য একটি ভুয়া আইপি অ্যাড্রেস তৈরি করেছে।
খানের বাড়িতে গুলি চালানোর দু'দিন পর, ১৬ এপ্রিল ক্রাইম ব্রাঞ্চ কচ্ছ থেকে বিহারের চম্পারণ অঞ্চলের বাসিন্দা ভিকি কুমার গুপ্তা (২৫) এবং সাগর কুমার পাল (২৪) নামে দুই বন্দুকবাজকে গ্রেফতার করে। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই পঞ্জাবের বাসিন্দা সনুকুমার সুভাষচাঁদ বিষ্ণোই (৩৫) এবং অনুজ্জকুমার ওমপ্রকাশ থাপন (২৩) নামে আরও দুই অভিযুক্তকে বন্দুকবাজদের অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ।
প্রকাশ্যে সলমনকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছেন লরেন্স বিষ্ণোই। ১৯৯৮ সালে সলমনের বিরুদ্ধে কৃষ্ণসার হরিণকে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল। গত ২৪ বছরেও এই মামলা শেষ হয়নি আদালতে। তবে বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের কাছে কৃষ্ণসার হরিণ ভগবানের আসনে রয়েছে, সেই কারণেই সলমনকে লাগাতার খুনের হুমকি দিয়ে চলেছে লরেন্স বিষ্ণোই।