মরশুমের প্রথম ডার্বিতে মোহনবাগানকে ১-০ গোলে হারাল ইস্টবেঙ্গল। ইস্টবেঙ্গল যে খোঁচা খাওয়া বাঘ। অতীতে বারবার সেটা প্রমাণ হয়েছে। আবারও যেন সেটাই প্রমাণ করল লাল হলুদ ব্রিগেড। শনিবার কলকাতার যুবভারতী স্টেডিয়ামে ডুরান্ড কাপে পরস্পর মুখোমুখি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। ডার্বিতে টানা ৮ বার হেরেছিল ইস্টবেঙ্গল। গত কয়েক বছরের চেয়ে এ বার অবশ্য তাদের দল তুলনায় ভালো ছিল কিন্তু মোহনবাগানের মতো হাইপ্রোপাইল দলকে টেক্কা দিতে পারবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। ইস্টবেঙ্গলের তুলনায় যথেষ্টই শক্তিশালী মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গল শেষ বার ডার্বি জিতেছিল সাড়ে চার বছর আগে অর্থাৎ ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ সালে। মাঝে একটি ড্র বাদ দিলে তার পর থেকে শুধুই জিতেছে মোহনবাগান। গত বারের ডুরান্ডে ১-০ জিতেছিল সবুজ মেরুন ব্রিগেড।
তবে এদিনের ম্যাচে একেবারে অন্য ছবি দেখা গেল। প্রায় ১৬৫৭ দিন পরে ডার্বিতে জয়ের মুখ দেখল ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের ৬১ মিনিটে নন্দকুমারের একমাত্র গোলে ডার্বি জিতল ইস্টবেঙ্গল। লাল-হলুদের কোচের দায়িত্ব নিয়ে ডার্বি জয়ের স্বাদ পেলেন স্প্যানিশ কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। সামনেই রয়েছে মোহনবাগানের এএফসি কাপের ম্যাচ। জুয়ান ফেরান্দোর নজরে যেমন ছিল ডার্বি জয়, তেমনই নজর রাখতে হত, কারোর যেন চোট না লাগে। সে কারণেই ঝুঁকিহীন ফুটবলেই নজর দিয়ে ছিল মোহনবাগান। সাবস্টিটিউটে জেসন কামিন্স, দিমিত্রি পেত্রাতোসরা ছিলেন।
মোহনবাগান সেট টিম। তাদের ডিফেন্স অনেক বেশি গোছানো। আত্মবিশ্বাসেও ভরপুর ছিল। ফলে মিডফিল্ড, আক্রমণ ভাগও অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলতে নেমেছিল। উল্টোচিত্র ছিল ইস্টবেঙ্গল শিবিরে। পুরো টিমটাই কার্যত নতুন ছিল। হাতে গোনা প্লেয়ার গত মরশুমে ছিলেন। কোচ নতুন। প্লেয়ারদের মধ্যে বোঝাপড়াটাও সেভাবে হয়ে ওঠেনি। ডিফেন্স অনেকটাই নড়বড়ে ছিল। ফলে মিডফিল্ড হোক বা আক্রমণ ভাগ, আত্মবিশ্বাস ততটা ছিল না লাল হলুদ শিবিরে। সেখানে থেকেই যেন ফাইট ব্যাক করল ইস্টবেঙ্গল।
ম্যাচের ৫৬ মিনিটে জোড়া পরিবর্তন করেন মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো। আর্মান্দো সাদিকু ও হুগো বোমাসের পরিবর্তে মাঠে নামেন অজি বিশ্বকাপার জেসন কামিন্স ও গত মরশুমের নায়ক দিমিত্রি পেত্রাতোস। এরপরেই ম্যাচের ৬১ মিনিটে ডান দিক থেকে বল নিয়ে উঠে যান নন্দকুমার সেকর। হঠাৎই গতি বাড়ান। সামনে ছিলেন অনিরুদ্ধ থাপা। বলটা ডান পা থেকে বাঁ পায়ে নেন। বক্সের ডান দিকে অনিরুদ্ধর সামনে থেকেই কোনাকুনি শট নেন। অসাধারণ গোল করে দলকে জেতান নন্দকুমার। মোহনবাগান গোলরক্ষক বিশাল কাইথের কাছে গোল রক্ষা করার কোনও সুযোগই ছিল না। এক গোলে এগিয়ে থেকে বেশ কিছুটা আত্মবিশ্বাস পায় ইস্টবেঙ্গল। এর মধ্যে কিছুটা সময় নষ্টেরও চেষ্টা দেখা যায়। এগিয়ে থাকা দল এমনটা করবে, প্রত্যাশিত। ৬ মিনিট অ্যাডেড টাইম দেওয়া হয়। শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। এরপরেই বহু প্রতিক্ষিত জয় যেন পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।