অবশেষে কি সেই ৫-০ ম্যাচের বদলা নিতে চলেছে মোহনবাগান? রবিবার কলকাতা ডার্বির বিরতিতে যখন মোহনবাগান ৩-০ গোলে এগিয়ে ছিল, তখন অনেকের মনেই সেই প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছিল। মোহনবাগান সমর্থকদের কেউ-কেউ তো রীতিমতো প্রার্থনা শুরু করে দিয়েছিলেন। আর ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের কেউ-কেউ আতঙ্কে ভুগছিলেন। বিশেষত প্রথমার্ধে যেরকম খেলছিল ইস্টবেঙ্গল, তাতে সেই ভয়টা বেশ জোরালোভাবেই চেপে বসেছিল ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের একাংশের মনে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ইস্টবেঙ্গলের পুরো ভোলই পালটে যায়। ০-৫ গোলে হারের ভয় তো দূর অস্ত, দুর্ধর্ষ কামব্যাকের স্বপ্নে বুঁদ হয়ে যান তাঁরা। শেষপর্যন্ত ১-৩ গোলে হেরে গেলেও ক্লেটন সিলভা, সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়রা যেভাবে লড়াই করেছেন, তাতে সমর্থকদের মন ভরে গিয়েছে। আর ম্যাচের শেষে খেলোয়াড়দের সেই নাছোড়বান্দা মনোভাবের প্রশংসা করলেন ইস্টবেঙ্গলের হেড কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতও।
ম্যাচের শেষে সরকারি সম্প্রচারকারী সংস্থা জিয়ো সিনেমায় কুয়াদ্রাত বলেন, ‘এটা একটা ভালো ফুটবল ম্যাচ হল। প্রচুর আবেগ জড়িয়ে ছিল। অনেক ঘটনা ঘটছিল। আমার মনে হয়, ইস্টবেঙ্গলের অনেক সমর্থকই ভাবছিলেন যে এই ম্যাচটার স্মৃতি নেতিবাচক হতে পারে। যখনই বিরতিতে খেলার ফল ৩-০ ছিল, তখন ভাবছিলেন যে অনেকদিন আগে সেই ০-৫ ব্যবধানে হারের প্রতিশোধ নেবে (মোহনবাগান)। যা বহুদিন আগে হয়েছিল। ইস্টবেঙ্গল ৫-০ গোলে জিতেছিল।’
ইস্টবেঙ্গলের হেড কোচ আরও বলেন, ‘সেইসময় (বিরতিতে) হয়তো মনে করেছিলেন যে ৫-০ গোলে জিতবে মোহনবাগান। কিন্তু দলের স্পিরিট মেলে ধরেছে খেলোয়াড়রা। হার না মানার মানসিকতা তুলে ধরেছে। ওরা দ্বিতীয়ার্ধে খুব ভালো খেলেছে। আমরা খেলার ফলটা ৩-২ করার খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিলাম। আর একবার খেলার ফল ৩-২ গোল হয়ে গেলেই যে কোনও কিছু হতে পারত। আমার মতে, দলের এই স্পিরিটের জন্য গর্ব করা উচিত সমর্থকদের।’
এমনিতে রবিবার ডার্বির শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের ১২ মিনিটেই পেনাল্টি পায় লাল-হলুদ। কিন্তু মোহনবাগানের পতন রুখে দেন বিশাল কাইথ। দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় ক্লেটনের পেনাল্টি বাঁচিয়ে দেন। তারপরই নিজেদের হাতে ম্যাচের দখল নিয়ে নেয় মোহনবাগান। ২৭ মিনিটে প্রথম গোল করেন জেসন কামিন্স। নয় মিনিট পরেই ইস্টবেঙ্গলের জালে বল ঢুকিয়ে দেন লিস্টন কোলাসো। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ের দু'মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন দিমিত্রি পেত্রাতোস।
বিরতির পরে কী হবে ভেবেই আঁতকে ওঠেন অনেক। আর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও সেভাবে করে মোহনবাগান। শুরুতেই নিশ্চিত পেনাল্টি পায়নি সবুজ-মেরুন বাহিনী। আর তারপরই ক্রমশ খেলায় ফিরে আসতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগানের উপর ক্রমশ চাপ বাড়াতে থাকে। ৫৩ মিনিটে সাউল ক্রেসপোর দুরন্ত গোলে ব্যবধান কমিয়ে ফেলে। আর প্রথম গোল পাওয়ার পরে মোহনবাগানের ঘুম ছুটিয়ে দেয়। একাধিকবার গোলের মুখ প্রায় খুলে ফেলে। কিন্তু গোল আসেনি। উলটে অতিরিক্ত সময় নিশ্চিত পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত হয় ইস্টবেঙ্গল। আর ৩-১ ব্যবধানে জিতে মাঠ ছাড়ে মোহনবাগান।
আরও পড়ুন: World Cup qualifier: জুনে অনুষ্ঠিত ভারত বনাম কাতার ম্য়াচটি কলকাতাতেই খেলতে চান ইগর স্টিম্যাচ
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।