অজিঙ্কা রাহানে এবং শার্দুল ঠাকুর শরীরের একাধিক বার আঘাত সহ্য করেছেন। তাঁরা অনেক সময়ে ফিজিয়োকে ডেকেছে শুশ্রুষা করিয়েছেন। রাহানে তো আঙুলে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন। তার পরেও হাল ছাড়েননি। ফোলা আঙুল নিয়েই লড়াই করে গিয়েছেন।
প্যাট কামিন্স এবং স্কট বোল্যান্ড যখন ভালো লেন্থ এড়িয়া থেকে বাউন্স করছিলেন, তখন অস্বস্তিতে পড়ে যাচ্ছিলেন রাহানে এবং শার্দুল। কিন্তু তার পরেও তাঁরা লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। দাঁতে দাঁত চেপে এক যোদ্ধার মতোই লড়াই করে গিয়েছেন দুই তারকা। তাদের এই লড়াকু মানসিকতাই সপ্তম উইকেটে ১০৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ভারতকে ফলোয়ান বাঁচাতে সাহায্য করেছে।
রাহানে এবং শার্দুলের দুর্দান্ত পার্টনারশিপ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কিছুটা রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের ঠুকে বলেছেন যে, এই জুটি ভারতীয় টপ-অর্ডারকে বার্তা দিয়েছে, কী ভাবে ধৈর্য ধরতে হবে এবং বিদেশী পরিস্থিতিতে সাহসী হতে হবে।
স্টার স্পোর্টসে সৌরভ বলেছেন, ‘ওরা ড্রেসিংরুমে দেখিয়ে দিল যে, যদি ইচ্ছে, মনের জোর থাকে আর কিছুটা ভাগ্য সহায় থাকে, তবে এই উইকেটে রান করা যায়। রাহানেকে কৃতিত্ব, ও দুর্দান্ত খেলেছে। শার্দুল প্রথম দিকে আঘাত পেয়েছিলেন কিন্তু ও হাল ছাড়েনি। ও অতীতে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ায় ভালো ব্যাটিং করেছে। ভারতের কাছ থেকে এটা একটা ভালো লড়াই। এটা টপ অর্ডারের জন্য একটা বার্তা।
প্রসঙ্গত, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের ইতিহাসে রাহানে ভারতের হয়ে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। হাফ সেঞ্চুরির ইনিংসে রাহানে ৫ হাজার রানও পূর্ণ করেন। এই ফাইনাবে ভারতের হয়ে কামব্যাক ম্যান নিঃসন্দহে অজিঙ্কা রাহানে। তিনি ১২৯ বলে ৮৯ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেছেন। আর শার্দুল ঠাকুর ১০৯ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৫১ রান করেন। এ ছাড়া দ্বিতীয় দিনে রবীন্দ্র জাদেজা ৫১ বলে ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছিলেন। ভারতের বাকি ব্যাটারদের অবস্থা অবশ্য তথৈবচ।
আরও পড়ুন: ওর ৫টি টেস্ট সেঞ্চুরিও রয়েছে- অশ্বিনকে বাদ দেওয়ায় রোহিতকে কচুকাটা করলেন স্টিভ
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে করা ৪৬৯ রানের জবাবে ভারত প্রথম ইনিংসে ১৭৩ রানে পিছিয়ে পড়ে। ভারতের টপ-অর্ডারে খেলা রোহিত শর্মা (১৫), শুভমন গিল (১৩), চেতেশ্বর পূজারা (১৪), বিরাট কোহলিরা (১৪) চূড়ান্ত ফ্লপ। জাদেজার পর ভারতকে অক্সিজেন দেন রাহানে আর শার্দুল। রাহানে-শার্দুল জুটি সপ্তম উইকেটে ১০৯ রান যোগ করে। যা ভারতকে ফলোয়ান বাঁচাতে সাহায্য করে। তবে তাঁদের লড়াইয়ে ফলোয়ান বাঁচলেও, প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ১৭৩ রানের বিশাল লিড পায়। টিম ইন্ডিয়ার জন্য যেটা চাপের হয়ে গিয়েছে।
চতুর্থ দিন লাঞ্চের আগে ৬ উইকেট হারালেও ২০১ রান করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। অর্থাৎ তারা ৩৭৪ রানে এগিয়ে রয়েছে। বাকি চার উইকেট তাড়াতাড়ি ফেলতে না পারলে ভারতের কপালে দুঃখ আছে। শুধু উইকেট ফেললেই হবে না, নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে রান তাড়া করতে নেমে ভারতের টপ অর্ডারকে উইকেটে টিকে থাকতে হবে। প্রথম ইনিংসের মতো হাল হলে, তবে প্রথম সংস্করণের মতো দ্বিতীয় সংস্করণের ফাইনালেও হেরে খালি হাতে ফিরতে হবে টিম ইন্ডিয়াকে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।