শুভব্রত মুখার্জি: আর মাত্র কয়েকঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরেই ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের অ্যান্টিগার নর্থ সাউন্ডে স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে চলতি অনুর্ধব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত মুখোমুখি হবে এই টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত অপরাজিত ইংল্যান্ড দলের। উল্লেখ্য ২৪ বছর পরে ফের একবার এই বিভাগের ফাইনালে প্রবেশ করেছে ইংল্যান্ড দল। অন্যদিকে ভারত এই পর্যায়ের সবথেকে ধারাবাহিক দল। ২০১৬ থেকে টানা এই বিভাগের বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলছে ভারত। তাদের দখলে রয়েছে চারবার বিশ্বকাপ জয়ের শিরোপা। তাদের অষ্টম ফাইনালে নামার আগে আসুন একনজরে দেখে নিন অনুর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের বিশ্বকাপে ভারতের অতীতের পারফরম্যান্সের ঝলক।
∆ ২০০০ সালের ফাইনালে লঙ্কানদের বিপক্ষে ৬ উইকেটে জয় :
এই ম্যাচে বল হাতে ভারতের হয়ে দুরন্ত পারফরম্যান্স করেন সলভ শ্রীবাস্তব এবং রীতেন্দর সিং সোধি। সোধি ১০ ওভারে দেন মাত্র ২৬ রান। যদিও কোন উইকেট পাননি তিনি। সলভ শ্রীবাস্তব ১০ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে নেন ৩ উইকট। ফলে মাত্র ১৭৮ রানে আটকে যায় শ্রীলঙ্কা। কলম্বোতে অনুষ্ঠিত সেই ফাইনালে লঙ্কানদের হয়ে জেহান মুবারক ১০৮ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন। ব্যাট হাতে সোধির ৪৩ বলে ৩৯ রানের অপরাজিত ইনিংস ভারতকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়। তাকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছিলেন নীরজ প্যাটেল। যিনি ৪৪ বলে ৩৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৪০.৪ ওভারেই ম্যাচ শেষ করে দেয় ভারত।
∆ ২০০৬ ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ৩৮ রানে হার :
রবীন্দ্র জাদেজা এবং পীযূষ চাওলা এই ম্যাচে নিজেদের মধ্যে ৭ উইকেট তুলে নেন ফলে সরফরাজের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মাত্র ১০৯ রানে অলআউট হয়ে যায়। ম্যাচে ৩৫ রান দিয়ে আনোয়ার আলির ৫ উইকেট এবং আখতার আয়ুবের নেয়া ৩ উইকেট কার্যত ভারতীয় ব্যাটিংয়ের মেরুদন্ড ভেঙে দেয়। ১৮.৫ ওভারে মাত্র ৭১ রানে ভারত অল আউট হয়ে যায়।
∆ ২০০৮ ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১২ রানে জয় (ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে):
তন্ময় শ্রীবাস্তবের লড়াকু ৭৪ বলে ৪৯ রানে ভর করে ভারত সেদিন ১৫৯ রানে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬০। অজিতেশ আর্গাল এবং প্রদীপ সাঙ্গওয়ানের অসাধারণ বোলিং পারফরম্যান্সে ১১ রানেই ৩ উইকেট হারায় প্রোটিয়া বাহিনী। এরপরেই বৃষ্টিতে বিঘ্নিত হয় ম্যাচ। ফের ফিরে আসার পরে জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার ৯৮ বলে ৯৯ রান করতে হত। কিন্তু পরিবর্তিত জয়ের লক্ষ্যে ১১৬ রানে পৌঁছানোর থেকে ১২ রান দূরে থেমে যায় তারা। ফলে বিরাটের নেতৃত্বাধীন ভারত তাদের দ্বিতীয় শিরোপা জিততে সক্ষম হয়।
∆ ২০১২ ফাইনালে ৬ উইকেটে জয় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে :
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক উইলিয়াম বোসিস্টো ১২০ বলে ৮৭ রানের এক অসাধারণ ইনিংস উপহার দেন। ফলে টাউন্সভিলের সেই ম্যাচে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২২৫ রান করে অজিরা। অধিনায়ক উন্মুক্ত চাঁদের অপরাজিত ১১১ রানে ভর করে সেদিন ৬ উইকেটে অনায়াসে ম্যাচ জেতে ভারত।
∆ ২০১৬ ফাইনালে ৫ উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হার :
উইন্ডিজ পেসার আলজারি জোসেফ এবং রায়ান জনের বোলিংয়ে এদিন একেবারেই সুবিধা করতে পারেননি ভারতীয় ব্যাটাররা। সরফরাজ খান একা ৮৯ বলে ৫১ রান করেন। ভারত মাত্র ১৪৫ রান করতে সমর্থ হয়। মীরপুরে এরপরেও ভারতীয় বোলাররা আপ্রাণ লড়াই চালান। তবে কেসি কার্টি এবং কিমো পল ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় নিশ্চিত করেন।
∆ ২০১৮ ফাইনালে অজিদের বিরুদ্ধে ৮ উইকেটে জয় :
জোনাথন মার্লোর ৭৬ রানে ভর করে অস্ট্রেলিয়া দল ২১৬ রান তুলতে সমর্থ হয়। মনজোৎ কালরার অপরাজিত ১০১ রান এবং হার্ভিক দেশাইয়ের ৪৭ রানে ভর করে মাত্র ৩৮.৫ ওভারেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছিল ভারত।
∆ ২০২০ ফাইনালে বাংলাদেশের কাছে ৩ উইকেটে হার :
বৃষ্টি বিঘ্নিত এই ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে পরিবর্তিত জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৭০ রান। বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলির ৭৭ বলে খেলা ৪৩ রানের ইনিংস তাদেরকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের জয়ের সেলিব্রেশন ঘিরে দুই দলের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।