আগামী বছরের শেষে দেউলিয়া হতে পারে ওপেন এআই সংস্থা, সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্টে যে কথাই বলছে অ্যানালাইটিক ইন্ডিয়া ম্যাগাজিন। চ্যাট জিপিটি চালাতে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে সংস্থার। অ্যানালাইটিক ইন্ডিয়া ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র চ্যাটজিপিটি পরিষেবা দিতেই ওপেনএআই সংস্থাটি প্রতিদিন ৭ লাখ ডলার অর্থাৎ এদেশের মূল্যে প্রায় ৮ কোটি টাকা খরচ করছে। সংস্থাটি জিপিটি ৩.৫ এবং জিপিটি ৪ এই দুই সংস্করণকে মনিটাইজ করার প্রচেষ্টা চালালেও সেই ভাবে লাভের মুখ দেখেনি তারা। বরং বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন সংস্থাটি। সিমিলারওয়েব সফটওয়্যার কোম্পানির তথ্য বলছে, জুলাই মাসে চ্যাটজিপিটির ব্যবহারকারী জুন মাসের তুলনায় ২০ কোটি কমেছে, যা মোট ব্যবহারকারীর নিরিখে ১২ শতাংশ।
চ্যাটজিপিটি বিশ্বজুড়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলেজেন্সিকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ওপেনএআই সংস্থার এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত মেসেজিং পরিষেবাটি চালু হয়। এরপর রেকর্ড গড়ে তারা। দ্রুত বর্ধনশীল অ্যাপের তকমা পাওয়া চ্যাটজিপিটি আজকে কিছুটা হলেও বিপদে। যাত্রার শুরুর দিকে অসংখ্য ব্যবহারকারী এতে আগ্রহ দেখিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু, গত কয়েক মাসে এই সংখ্যাটা ক্রমশ নিম্মমুখী হয়েছে। ওয়েবসাইট সংক্রান্ত সংস্থা সিমিলারওয়েব জানিয়েছে, চলতি বছরের জুলাই শেষে দেখা গেছে চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীর সংখ্যা আরও কমে গেছে। সংখ্যাটা এসে দাঁড়িয়েছে ১৫০ কোটিতে। আর অন্যদিকে বিপুল ব্যয়ে নাজেহাল ওপেনএআই সংস্থাটি।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির এপিআই সেবাটি সমস্যার অন্যতম আরেকটি অংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক প্রতিষ্ঠান যারা পূর্বে তাদের কর্মীদের চ্যাটজিপিটি ব্যবহার না করতে উদ্বুদ্ধ করেছে, এখন তারা ওপেন এআইয়ের এপিআই সেবা নিচ্ছে। এরমাধ্যমে তারা নিজেরা নিজেদের কাজের প্রয়োজন অনুযায়ী চ্যাট বট তৈরি করতে পারছে।
অ্যানালাইটিকস ইন্ডিয়া ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন অনুসারে, টেকনোলজির বাজারে আজকের দিনে অসংখ্য ওপেন সোর্স এলএলএম মডেল রয়েছে, যেগুলো বিনামূল্যে লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবহার করা যায়। যেমন, মাইক্রোসফটের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি মেটার লিয়ামা-২ ব্যবহারকারীদের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্যও বিনামূল্যে পরিষেবা দিচ্ছে। ফলে বাজারে বহু প্রতিযোগী অবস্থান করছে। ওপেনএআইয়ের ব্যবহারকারীরা অন্যান্য বিকল্পগুলিও দেখছেন এবং সুবিধা মত বেছে নিচ্ছেন। চ্যাটজিপিটির পরিষেবা বিনামূল্য নয়। আবার এটি বেশ কিছু ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধও বটে।
প্রতিবেদন অনুসারে, ওপেনএআই এখনও ব্যবসা থেকে লাভ করতে পারেনি। উল্টে মে মাসে ৫৪ কোটি ডলারে ক্ষতি হয় সংস্থাটির। ওপেনএআই সংস্থার পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়েছে ২০২৩ সালে তারা ২০ কোটি ডলার লাভ করবে। ২০২৪ সাল শেষে লাভের পরিমাণ ১০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে মনে করছে সংস্থাটি। তবে বর্তমানে ক্ষতি মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ওপেনএআই।