পাঁচটি ওষুধের সংমিশ্রণ। এক জটিল প্রক্রিয়া। সফলভাবে ব্যাঙের কাটা পা পুনরুদ্ধার করলেন মার্কিন গবেষকরা। ডেইলি মেলের রিপোর্ট অনুযায়ী, এরপর স্তন্যপায়ী প্রাণীর উপর পরীক্ষার পরিকল্পনা।
আফ্রিকান ক্লওড(Clawed) ফ্রগের (জেনোপাস লেভিস) উপর পরীক্ষাটি করা হয়েছিল। ব্যাঙটির একটি পা ছিল না।
আহত অংশটি একটি সিলিকন ক্যাপের মধ্যে আবদ্ধ করা হয়। ক্যাপের মধ্যে ছিল প্রোটিন জেলে ভরা পাঁচ-ওষুধের ককটেল, যাতে মস্তিষ্ক থেকে উদ্ভূত নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর, 1,4-ডাইহাইড্রোফেননথ্রোলিন-4-ওয়ান-3 কার্বক্সিলিসিড, রেজলভিন ডি 5, গ্রোথ হরমোন এবং রেটনোইক অ্যাসিড ছিল।
প্রতিটি ওষুধের আলাদা কাজ। এর মধ্যে প্রদাহ কমানো থেকে স্নায়ু ফাইবার, রক্তনালী এবং পেশীর বৃদ্ধিতে সাহায্যকারী ফর্মুলা ছিল।
'বায়ো ডোম'গুলিকে মাত্র ২৪ ঘন্টার জন্য এই দ্রবণ দিয়ে সিল করা হয়েছিল। আর তারপরেই নতুন করে পা গজানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। সম্পূর্ণ আগের মতোই নতুন পা গজাতে ১৮ মাস সময় লেগেছিল।
মেডফোর্ড, ম্যাসাচুসেটস এবং হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির উইস ইনস্টিটিউটের গবেষকদের দল জানিয়েছেন, প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাঙ এটি। স্বাভাবিক ক্ষেত্রে এই ব্যাঙ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পুনরুদ্ধারে অক্ষম। অথচ এই প্রক্রিয়ায় হাড়যুক্ত পা-ই নয়, হাড়হীন পায়ের আঙ্গুলও নিঁখুতভাবে গজিয়েছে।
আফ্রিকান ক্লওড ফ্রগের পায়ের পাতা জোড়া হয়। মূলত জলে বেশি থাকে, এমন ব্যাঙ বা হাঁসের মতোই। সেই পায়ের পাতাটাও গজিয়েছে নিপুণভাবে। এখন আগের মতোই ফের সাঁতার কাটছে ব্যাঙটি।
গবেষকদের দাবি, এই পদ্ধতিটির অন্তিম উদ্দেশ্য একটাই। মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পুনরুদ্ধারের পদ্ধতি জানা। আর তারই একটি ধাপ এটি।
'মাস-ব্যাপী পুনর্জন্ম প্রক্রিয়াকে গতিশীল করার জন্য শুধুমাত্র ওষুধের সংক্ষিপ্ত এক্সপোজারই লেগেছে। আর কিছু নয়। তার থেকে বোঝা যায় যে ব্যাঙ এবং সম্ভবত অন্যান্য প্রাণীর মধ্যেও সুপ্ত পুনরুত্পাদন ক্ষমতা থাকতে পারে। আমাদের কাজ হবে সেটাকেই ট্রিগার করা,' গবেষণার লেখক-গবেষক নিরোশা মুরুগান এমনটাই বলেছেন।
স্যালাম্যান্ডার, স্টারফিশ, কাঁকড়া এবং টিকটিকির মতো অনেক প্রাণীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পুনরুত্পাদন করার ক্ষমতা রয়েছে। অন্যদিকে, ফ্ল্যাটওয়ার্মের মতো প্রাণী টুকরো টুকরো করলে, প্রতিটি টুকরা থেকে একটি সম্পূর্ণ জীব জন্ম নেয়।
বলাই বাহুল্য, মানুষের এই ক্ষমতা নেই। তবে একমাত্র লিভারই ৫০ শতাংশ ক্ষতির পুনরুদ্ধার হয়।