পুরাণে বর্ণিত আছে যে রাজা অশ্বপতির একমাত্র কন্যা ছিলেন সাবিত্রী। বনবাসী রাজা ধুম্রসেনের পুত্র সত্যবানের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর ৷ সত্যবান আর সাবিত্রীর জীবন ভালোই চলছিল। কিন্তু একদিন নারদ মুনির আগমন হল তাঁদের মহলে ৷ তিনি বললেন যে, সত্যবান খুব কম বয়সেই মারা যাবেন ৷
একথা শুনেও সাবিত্রী কিন্তু নিজের সাহস হারালেন না ৷ সত্যবানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ভগবানের আরাধনা শুরু করলেন ৷ তিনি সমস্ত মহলের সুখ পরিত্যাগ করে বনে গিয়ে তাঁর পরিবারের সেবা করার সময় একদিন জঙ্গলে সত্যবান অজ্ঞান হয়ে পড়লেন ৷ সাবিত্রী বুঝতে পেরেছিলেন, যমরাজ প্রাণ নিতে এসেছেন ৷ সাবিত্রী তিন দিন অভুক্ত ছিলেন ৷ তিনি যমরাজের কাছে প্রার্থনা করলেন যে, তিনি যেন তাঁর স্বামীর প্রাণ ফিরিয়ে দেন ৷
এরপর যখন যমরাজ শুনলেন না সাবিত্রীর অনুরোধ, তখন সাবিত্রী তাঁর পিছন পিছন আসতে লাগলেন ৷ অনেক বার বারণ করার পরেও যখন সাবিত্রী শুনলেন না, তখন তাঁর ত্যাগ এবং সাহস দেখে যমরাজ প্রসন্ন হলেন এবং তাকে তিনটী বর প্রার্থনা করার জন্য বললেন ৷
প্রথমেই সাবিত্রী সত্যবানের দৃষ্টিহীন বাবা মার জন্য তাঁদের চোখের জ্যোতি প্রার্থনা করলেন। দ্বিতীয় বর হিসেবে তিনি তাঁদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া রাজ্য চাইলেন এবং তৃতীয় বর হিসাবে তিনি শত পুত্রের জননী হওয়ার বরদান চাইলেন ৷ তথাস্তু বলার পরেই যমরাজ বুঝতে পেরেছিলেন যে সাবিত্রীর পতিকে আর সঙ্গে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় ৷ এই জন্য তিনি সাবিত্রীকে অখন্ড সৌভাগ্যের আশীর্বাদ দেন এবং সত্যবানকে ছেড়ে অন্তর্ধান হন ৷
এই সময় সাবিত্রী নিজের স্বামীকে নিয়ে বটবৃক্ষের নীচে আশ্রয় নিয়েছিলেন ৷ এই জন্য এই দিন মহিলারা নিজের পরিবারের জীবনসঙ্গীর দীর্ঘায়ু কামনা করে বটবৃক্ষের পূজা করেন এবং বটবৃক্ষে সুতো বাঁধেন।