হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশী তিথি জয়া একাদশী হিসেবে পালিত হয়। চলতি বছর ১২ ফেব্রুয়ারি, শনিবার জয়া একাদশী ব্রত ও উপবাস পালিত হবে। জয়া একাদশীর উপবাস রেখে এবং নিয়ম অনুযায়ী বিষ্ণুর পুজো করলে ব্যক্তি ভূত, প্রেত, পিশাচ যোনি থেকে মুক্তি লাভ করে। বিষ্ণুর আশীর্বাদে মৃত্যুর পর মোক্ষ লাভ করে সেই জাতক। কষ্ট ও অজ্ঞানতাবশত করে থাকা পাপ থেকেও মুক্তি লাভ করেন জাতক।
জয়া একাদশীর শুভক্ষণ
চলতি বছর মাঘ শুক্ল একাদশী ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টা ৫২ মিনিট থেকে শুরু হয়ে যাবে। ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪ টে ২৭ মিনিট পর্যন্ত একাদশী তিথি থাকবে। উদয়া তিথির কারণে ১২ ফেব্রুয়ারি একাদশী পালিত হবে। এদিন বেলা ১২টা ১৩ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত পুজোর শুভক্ষণ থাকবে।
ব্রতভঙ্গের সময়
১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ৭টা ০১ মিনিট থেকে ৯টা ১৫ মিনিটের মধ্যে পারণ করতে হবে। এদিন সন্ধে ৬টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত দ্বাদশী তিথি থাকবে।
জয়া একাদশী ব্রতকথা
কৃষ্ণের কাছ থেকে মাঘ শুক্ল একাদশীর মাহাত্ম্য সম্পর্কে জানতে চান ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির। তার পরই জয়া একাদশী ব্রত কথা শোনান তিনি।
একদা নন্দন বনে উৎসব হচ্ছিল। এতে দেবী-দেবতা, সন্ত উপস্থিত ছিলেন। সঙ্গীত ও নৃত্যও চলছিল ওই উৎসবে। গন্ধর্ব মাল্যবান ও পুষ্পাবতী নৃত্য করছিলেন। দুজনেই পরস্পরের মধ্যে মোহিত হয়ে দিগ্বিদিক জ্ঞান শূণ্য হয়ে এমন নৃত্য শুরু করেন, যা মর্যাদা অতিক্রম করে যায়।
তাঁদের এই ব্যবহারে ইন্দ্র রেগে যান। দুজনকেই স্বর্গলোক থেকে নিষ্কাশিত করে মৃত্যু লোক অর্থাৎ পৃথিবীতে বসবাস করার অভিশাপ দেন। অভিশাপের কারণে মাল্যবান ও পুষ্পাবতী পিশাচ যোনিতে জন্ম লভ করেন।
হিমালয়ের একটি বৃক্ষে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা। কষ্টে জীবন কাটত তাঁদের। সেই বছর মাঘ শুক্ল একাদশীতে তাঁরা ভোজন করে না, শুধু ফলাহার করে। শীতের কারণে তাঁদের ঘুম আসে না, তাই দুজনেই রাত জাগে। অতিরিক্ত শীতের কারণে তাঁদের মৃত্যু হয়ে যায়।
পুষ্পাবতী ও মাল্যবান নিজের অজান্তে জয়া একাদশী ব্রত করেন। তাঁদের দুজনের ওপরই বিষ্ণুর দৃষ্টি পড়ে। তখন দুজনকেই প্রেত যোনি থেকে মুক্ত করে দেন। জয়া একাদশীর ব্রতর প্রভাবে তাঁরা আগের চেয়েও অধিক রূপবান হয়ে ওঠেন এবং স্বর্গলোকে পৌঁছে যান।