প্রতি বছর চৈত্র কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিকে শীতলা পুজো করা হয়। এদিন উনুন ঠান্ডা রাখা হয়। হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী চলতি বছর ৪ এপ্রিল শীতলা অষ্টমী পুজো হবে। এ দিন বাসী খাবারের নৈবেদ্য নিবেদন করা হয় শীতলাকে। এই দিনটি আবার ঋতু পরিবর্তনের ইঙ্গিতও দেয়।
পুজোর শুভক্ষণ:
শীতলা অষ্টমী পুজো সময়- সকাল ৬টা ০৮ মিনিট থেকে সন্ধে ৬টা ৪১ মিনিট পর্যন্ত।
মোট সময়- ১২ ঘণ্টা ৩৩ মিনিট।
অষ্টমী তিথি শুরু- ৪ এপ্রিল ভোর ৪টা ১২ মিনিটে।
অষ্টমী তিথি সমাপ্ত- ৫ এপ্রিল, ভোর ২টো ৫৯ মিনিটে।
শীতলা অষ্টমীর দিনে সৃষ্ট একাধিক শুভ মুহূর্ত:
অভিজীত মুহূর্ত- বেলা ১১টা ৪৭ মিনিট থেকে ১২টা ৩৭ পর্যন্ত।
বিজয় মুহূর্ত- দুপুর ২টো ১৭ মিনিট থেকে ৩টে ০৭ মিনিট পর্যন্ত।
গোধূলি মুহূর্ত- সন্ধে ৬টা ১৪ মিনিট থেকে ৬টে ৩৮ মিনিট পর্যন্ত।
অমৃত কাল- রাত্রি ৯টা ২৪ মিনিট থেকে ১০টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত।
নিশীথ মুহূর্ত- রাত ১১টা ৪৮ মিনিট থেকে ১২টা ৩৪ মিনিট পর্যন্ত (৫ এপ্রিল)।
সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ- ভোর ২টো ০৬ মিনিট থেকে ৫টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত (৫ এপ্রিল)।
ব্রতকথা:
পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, এক বৃদ্ধা মহিলা ও তাঁর দুই পুত্রবধূ শীতলার উপবাস রাখেন। অষ্টমীর দিনে বাসী ভাত শীতলাকে ভোগ দেওয়া হয় ও খাওয়া হয়। সম্প্রতি সন্তান প্রসব করেছিলেন ওই দুই পুত্রবধূ। তাই বাসী খাবার তাঁদের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে ভেবে সকালে রান্না করে নেন তাঁরা। তাঁদের শ্বাশুড়ি এ বিষয় জানতে পারলে রেগে যান। কিছু ক্ষণ পর ওই দুই পুত্রবধূর সন্তানের মৃত্যু হয়ে যায়। এর পরই ওই দুই পুত্রবধূকেই বাড়ি থেকে বের করে দেন তাঁদের শ্বাশুড়ি।
সন্তানদের মৃতদেহ নিয়ে তাঁরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। মাঝরাস্তায় বিশ্রামের জন্য বসলে, সেখানে ওরী ও শীতলা নামক দুই বোনের সঙ্গে দেখা হয়। দুজনেই নিজের মাথার উকুনের কারণে বিরক্ত ছিলেন। বোনেদের সমস্যায় দেখে ওই দুই পুত্রবধূর খারাপ লাগে। এর পরই তাঁদের মাথা থেকে উকুন বার করতে শুরু করে পুত্রবধূরা। কিছুক্ষণ পর দুই বোনই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। শীতলা ও ওরী পুত্রবধূদের আশীর্বাদ দেন, বলেন যে, তাঁদের কোল সর্বদা ভরে থাকবে।
এই কথা শুনে দুজনেই কাঁদতে শুরু করে এবং দুই বোনকে নিজের সন্তানদের মৃতদেহ দেখান। তা দেখে শীতলা বলেন, যে এটা তাঁদের কর্মফল। পুত্রবধূরা বুঝতে পারে যে শীতলা অষ্টমীর দিনে টাটকা খাবার খাওয়ার জন্যই তাঁদের এই দুর্গতি হয়েছে।
এ সব জেনে তাঁরা শীতলা দেবীর কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এর পরই দুই সন্তানকে জীবিত করে দেন শীতলা। সেদিনের পর থেকে সমগ্র গ্রামে উল্লাসের সঙ্গে শীতলা ব্রত পালন করা শুরু হয়।