চলতি বছর এপ্রিল মাসে আটটি গ্রহ রাশি পরিবর্তন করবে। যা মানব জীবন, বিশ্ব রাজনীতি ও প্রকৃতির ওপর প্রভাব বিস্তার করবে। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ অর্থাৎ ৭ এপ্রিল মঙ্গল কুম্ভ রাশিতে প্রবেশ করবে, ৮ এপ্রিল মেষ রাশিতে বুধের গোচর হবে। ১২ এপ্রিল মেষ রাশিতে রাহু ও তুলা রাশিতে কেতুর আগমন ঘটবে। ১৩ এপ্রিল মীন রাশিতে বৃহস্পতি প্রবেশ করবে। ১৪ এপ্রিল মেষ রাশিতে সূর্যের আগমন হবে। ২৭ এপ্রিল শুক্র মীন রাশিতে প্রবেশ করবে, ২৯ এপ্রিল কুম্ভ রাশিতে প্রবেশ করবে কর্মফলদাতা শনি। বেশ কয়েক বছর পর এমন যোগ সৃষ্টি হচ্ছে। গত আড়াই বছর ধরে মকর রাশিতে শনির বিচরণ হচ্ছে। এর সঙ্গে মকর রাশিতে বৃহস্পতি প্রবেশ করায় চাণ্ডাল যোগ সৃষ্টি হয়, যার ফলে করোনা অতিমারীর প্রকোপ সহ্য করতে হয় বিশ্ববাসীকে। প্রায় ৯০-১০০ বছর পর মকর রাশিতে বৃহস্পতির সঙ্গে শনির যুতি হয়। এ ছাড়াও বৃষ রাশিতে রাহু ও বৃশ্চিক রাশিতে কেতু প্রবেশ করায় বিশ্বে হিংসাত্মক প্রবৃত্তি বৃ্দ্ধি পায়।
শনি একটি রাশিতে আড়াই বছর এবং বৃহস্পতি ১৩ মাস বিচরণ করে। রাহু ও কেতু দেড় বছর একটি রাশিতে বিরাজ করে। গত আড়াই বছর ধরে চলতে থাকা গ্রহের বিষম চক্র ২২ এপ্রিলের মধ্যে শেষ হতে চলেছে। এই সমস্ত রাশির গোচররে ফলে বিশ্বে অস্থিরতা ও হিংসাত্মক প্রবৃত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। এবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। মানব জীবনের দুশ্চিন্তা দূর হবে। করোনার ভয় থেকে সকলে মুক্তি পাবেন। জীবন পূর্ব অবস্থায় ফিরে আসবে। রাজনৈতিক টানাপোড়েনও দূর হবে। বিশ্বে আধ্যাত্মিক প্রবৃত্তির উদয় হবে। ভারত থেকে এর সূচনা হবে এবং সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে যাবে।
বৃহস্পতি স্বরাশি মীনে আসবে ও শনি মকর রাশির যাত্রা শেষ করে কুম্ভে প্রবেশ করবে। এর ফলে শনি নিজের বৈভবশালী শক্তি প্রদর্শন করবে। উল্লেখ্য মকরে উপস্থিত শনি সর্বদা ভয়াবহ ফলাফল প্রদান করে থাকেন। যে জাতকের সাড়েসাতি চলে, তাদের নানা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে দিন কাটাতে হয়। কিন্তু কুম্ভ রাশিতে এসে ব্যক্তি ও বিশ্বের প্রত্যাশা পূরণ করেন। শনির রাশি পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের যুদ্ধ সঙ্কটও সমাপ্ত হবে, কিন্তু অবসাদ বজায় থাকবে।
জানুয়ারি ২০২০ সালে শনি মকর রাশিতে প্রবেশ করে, তার কয়েকদিন পর বৃহস্পতি মকর রাশিতে প্রবেশ করে যায়। এর প্রভাবে দেড়বছর পর্যন্ত করোনার দাপট বজায় ছিল। তার পর শনি মকর রাশি থেকে বেরিয়ে কুম্ভ রাশিতে প্রবেশ করে। এ সময় বিশ্বে হিংসার আগুন জ্বলে ওঠে। কৃষক আন্দোলন, দিল্লি হিংসা, রাজনৈতিক টানাপোড়েন, আফগানিস্তানে তালিবানের শাসন, ইওরোপীয় দেশে যুদ্ধের পরিস্থিতি বজায় থাকে। এবার শনি মকর রাশি ত্যাগ করে কুম্ভ রাশিতে প্রবেশ করবে। মকরের তুলনায় কুম্ভ অনেক মৃদু রাশি। আড়াই বছর কুম্ভ রাশিতে শনির গোচর হবে। শনি ২৯ এপ্রিল থেকে ৪ জুন পর্যন্ত মার্গি থাকবেন। এর পর ৪ জুন থেকে ১২ জুলাই বক্রি থাকবে শনি।
কিছু গ্রহ নিজের শেষের অংশে রয়েছে, আবার কিছু কিছু
গ্রহ সূচনা পর্বে থাকছে। শেষ পর্যায় অর্থাৎ এই গ্রহগুলি বৃদ্ধত্ব লাভ করেছে। আবার রাশি পরিবর্তনের পর গ্রহের কম ডিগ্রি হওয়া শিশু অবস্থার সূচক। এই দুই পরিস্থিতিতে প্রায় এক দেড় মাস গ্রহের কম প্রভাব থাকবে। এ কারণে জাতীয় হিংসা, রাষ্ট্রে যুদ্ধ, ছত্র ভঙ্গ, রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলতে থাকবে।
শনি কুম্ভ রাশিতে প্রবেশ করলে মীন, কুম্ভ ও মকর রাশির জাতকরা শনির সাড়েসাতির কবলে পড়বে। কর্কট ও বৃশ্চিক রাশির জাতকদের ওপর শনির আড়াইয়ের প্রকোপ থাকবে। শনি মকর রাশিতে থাকলে ন্যয় করেন ও কুকর্মের শাস্তি দেন। তবে কুম্ভ রাশিতে বিরাজ করে শনি লাভজনক ফলাফল দেন। কুম্ভে শনি প্রবেশ করায় মেষ, বৃষ, মিথুন, তুলা, ধনু, মকর ও কুম্ভ রাশির জাতকদের পদ-প্রতিষ্ঠা, ধন-লাভ এবং পদোন্নতির যোগ সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু কর্কট, সিংহ, কন্যা, বৃশ্চিক ও মীন রাশির জাতকদের সতর্ক থাকতে হবে। বৃহস্পতি মীন রাশিতে প্রবেশ করে বিশ্বে আধ্যাত্মিকতা ও শক্তি অভ্যুদয় করবেন, ভারতে এর সূচনা হবে। রাহু, কেতু, শনি, মঙ্গল, সূর্যের রাশি পরিবর্তনের ফল স্বরূপ ভারতের মুদ্রা কোষে বৃদ্ধি হবে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের ভাবমূর্তি ভালো হবে। মধ্যবিত্ত শ্রেণী স্বস্তি লাভ করবে, গত আড়াই বছরের মানসিক অবসাদ থেকে থেকে মুক্তি পাবেন। সামরিক, আর্থিক ও শিক্ষা ক্ষেত্রে ভালো সুযোগ লাভ করা যাবে। মেষ ও তুলা রাশি রাহু-কেতুর গোচর প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে নিমন্ত্রণ জানাবে। চক্রবাত, ঝড়, ভূমিকম্প-সহ নানান অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটতে পারে।