হিন্দু ধর্মশাস্ত্র অনুযায়ী শিবের পুজো করলে তাঁর আশীর্বাদ পাওয়া যায়। তবে শ্রাবণ মাসে শিবপুজো করলে বিশেষ ফল পাওয়া যায় বলে উল্লেখ রয়েছে। শিবপুরাণের রুদ্র সংহিতায় বিভিন্ন ধরণের অন্ন-শস্য দিয়ে শিবপুজোর কথা বলা হয়েছে। আবার বিভিন্ন অন্নের মাধ্যমে পুজোর ফলও ভিন্ন ভিন্ন বলে উল্লেখ রয়েছে শিব পুরাণে। এই সমস্ত অন্ন-শস্য শিবকে অর্পণ করার পর গরিবদের মধ্যে বিতরণ করা উচিত।
জানুন কোন অন্ন অর্পণে কী ফল পাওয়া যায় -
চাল- শিবপুরাণ অনুযায়ী শিবকে অখণ্ড চাল অর্পণ করলে উপাসকের লক্ষ্মী লাভ হয়। শিবকে বস্ত্র অর্পণ করে তার উপর চাল রেখে সমর্পিত করলে, তা আরও ভালো বলে মনে করা হয়।
তিল- শিবকে তিল অর্পণ করলে ব্যক্তির সমস্ত পাপক্ষয় য়। শনিদোষ থেকে মুক্তির জন্য শিবকে কালো তিল অর্পণ করা উচিত।
যব- শিবপুরাণ অনুযায়ী যব দিয়ে শিবপুজো করলে স্বর্গীয় সুখ বৃদ্ধি হয়।
গম- গম দিয়ে তৈরি খাদ্যবস্তু দিয়ে শিবপুজো করলে সন্তানের বৃদ্ধি হয়।
মুগ- মুগ দিয়ে পুজো করলে মহাদেব সেই ব্যক্তিকে সুখ-সমৃদ্ধির আশীর্বাদ দেন।
বাজরা- বাজরা দিয়ে শিব পুজো করলে ধর্ম, অর্থ ও কামভোগে বৃদ্ধি হয়। এছাড়া সমস্ত সুখ লাভ করা যায়।
শ্রাবণে এই উপায়ে প্রসন্ন হন শিব -
১) শ্রাবণে কোনও সোমবার জলে দুধ ও কালো তিল দিয়ে শিবলিঙ্গের অভিষেক করুন। অভিষেকের জন্য তামার পাত্রের পরিবর্তে অন্য কোনও ধাতুর বাসন ব্যবহার করুন। অভিষেকের সময় ওম জূং সঃ মন্ত্র জপ করতে থাকলে রোগমুক্তি ঘটে।
২) প্রতিদিন ২১টি বেলপাতায় চন্দন দিয়ে ওম নমঃ শিবায় লিখে শিবলিঙ্গে অর্পণ করুন। এর ফলে সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ হয়।
৩) বিবাহে বাধা এলে শ্রাবণ মাসে রোজ শিবলিঙ্গে জাফরান মিশ্রিত দুধ অর্পণ করুন। এর ফলে শীঘ্রই বিবাহের যোগ দেখা দেবে।
৪) এই মাসে রোজ বলদকে সবুজ ঘাস খাওয়ান। এর ফলে কষ্টের নিবারণ হবে। জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি আসবে।
৫) শ্রাবণে গরিবদের ভোজন করালে বাড়িতে কখনও অন্নাভাব হবে না ও পূর্বপুরুষদের আত্মাও শান্তি পাবে।
৬) রোজ সকালে স্নানাদির পর শিবমন্দিরে গিয়ে শিবলিঙ্গে জলাভিষেক করুন ও কালো তিল অর্পণ করুন। এরপর মন্দিরে কিছুক্ষণ বসে মনে মনে ওম নমঃ শিবায় মন্ত্রের জপ করুন। এর ফলে মানসিক শান্তি পাবেন ও রোগ-শোক দূর হবে।
৭) কোনও সমস্যা থাকলে, শ্রাবণ মাসে রোজ সকালে গুগ্গুলের ধূপ জ্বালান।