জয়া একাদশী ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে। জয়া একাদশীর দিন ভগবান বিষ্ণুর উপেন্দ্র রূপের পুজো করা হয়।পদ্ম পুরাণের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থেও জয়া একাদশীর গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে।
এই উপবাস সম্পর্কে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ যুধিষ্ঠিরকে বলেছিলেন যে এই উপবাস পালন করলে মারাত্মক পাপও দূর হয়, কেউ কখনও পিশাচ, ভূত বা প্রেত রূপে জন্ম নেয় না, পুরাণে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। জয়া একাদশীর ব্রত কথা জেনে নিন।
জয়া একাদশীর উপবাসের ব্রত কথা: কিংবদন্তি অনুসারে, ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণর কাছ থেকে জয়া একাদশীর উপবাসের গুরুত্ব জানতে পেরেছিলেন। কাহিনী বর্ণনা করতে গিয়ে শ্রীকৃষ্ণ বলেন, একবার নন্দন বনে ইন্দ্রের দরবারে উৎসব চলছিল। এই সমাবেশে দেবতা ও ঋষিরা আনন্দে উৎসব উপভোগ করছিলেন। উৎসবে গন্ধর্বরা গান গাইতেন আর অপ্সরারা নাচতেন। এই গন্ধর্বদের মধ্যে একজন ছিলেন মাল্যবন। সেখানে পুষ্যবতী নামে এক সুন্দরী নর্তকী ছিলেন। উৎসবের সময়, পুষ্যবতী এবং মাল্যবান একে অপরের প্রতি মোহগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং সকলের উপস্থিতিতে তারা তাদের লাজ লজ্জা ভুলে যায়।
পুষ্যবতী ও মাল্যবনের এই কাজে দেবতা ও ঋষিরা অস্বস্তিতে পড়েন। এর পর দেবরাজ ইন্দ্র অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলেন। ইন্দ্র তাদের উভয়কে স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে নশ্বর জগতে (পৃথিবী) পিশাচের রূপে বসবাস করার অভিশাপ দেন। অভিশাপের প্রভাবে পুষ্যবতী ও মাল্যবান পিশাচ রূপে ভুগতে শুরু করেন। এই জীবন দুজনের কাছেই ছিল খুবই যন্ত্রণাদায়ক।
মাঘ মাসে শুক্লপক্ষের জয়া একাদশীর দিন এল। এদিন দুজনেই শুধু ফল খেতে পেয়েছিলেন। ঠাণ্ডার কারণে রাতে দুজনেই ঘুমাতে পারেননি। এভাবে একাদশীর রাত জাগরণও ঘটে অজান্তে। সেই দিন, তারা তাদের কর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ভগবান বিষ্ণুর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন যে তিনি তাদেরকে এই যন্ত্রণাদায়ক জীবন থেকে যেন মুক্তি দেন। অজ্ঞাতসারে দুজনেই জয়া একাদশীর উপবাস সম্পন্ন করেন, সকাল নাগাদ দুজনেই মারা যান। এই উপবাসের প্রভাবে তারা দুজনেই পিশাচ অবস্থার হাত থেকে মুক্তি পেয়ে আবার স্বর্গে চলে যান। এর পর থেকে জয়া একাদশীর উপবাস পালন করা শুরু হয়।