বাঁকুড়া শিশুপাচারকাণ্ডে বিকাশ গুপ্তা নামে আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। দুর্গাপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই অভিযুক্তকে। ধৃত গোটা চক্রের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীদের দাবি, পেশায় মুদি ব্যবসায়ী বিকাশ গুপ্তার দুর্গাপুর মেইন গেটে একটি দোকান রয়েছে। এই ব্যক্তির মাধ্যমেই অভিযুক্ত রিয়া বাদ্যকারের সঙ্গে পরিচয় হয় নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমল রাজোরিয়ার। তাঁকে জেরা করে আরও তথ্য মিলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নবোদয় বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সুষমা শর্মা নিঃসন্তান হওয়ায় একটি শিশু কিনতে চান তিনি। সেকথা জানতেন কমল রাজোরিয়া। ওদিকে নিজেকে ৫ সন্তানের জননী বলে দাবি করা রিয়া বাদ্যকার তাঁর সন্তানদের বিক্রি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। পুলিশের দাবি, সদ্য স্বামীহারা রিয়ার ফের বিয়ে করার পরিকল্পনা ছিল। তার আগে সন্তানদের রাস্তা থেকে সরাতে চাইছিলেন তিনি।
তবে ওই ৫ সন্তানের মা রিয়াই কি না তা নিয়ে খটকা রয়েছে তদন্তকারীদের মনেও। ২৩ বছরের যুবতী কী করে ৫ সন্তানের মা হতে পারেন তার জবাব হাতড়াচ্ছেন তাঁরা। সেজন্য প্রয়োজনে DNA পরীক্ষা করানোর পরিকল্পনা করছেন তাঁরা।
তদন্তে প্রকাশ, রিয়ার সঙ্গে সুষমা ও তাঁর স্বামী সতীশ ঠাকুরের পরিচয় করিয়ে দেয় বিকাশ গুপ্তা। গোটা লেনদেনে বখরা ছিল তাঁরও।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, রিয়ার ৯ মাসের পুত্রসন্তানকে কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন সুষমা ও সতীশ। কিন্তু তিনি জানান ২ কন্যাসন্তানকে নিলে তবে মিলবে পুত্রসন্তান। রাজি হয়ে যান দম্পতি। এর পর ১.৭০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তিন সন্তানকে কিনে নেন তাঁরা। পুত্র সন্তানকে নিজেদের বাড়ি নিয়ে গিয়ে ২ কন্যাসন্তানকে রেখে দেন অধ্যক্ষ কমল রাজোরিয়ার বাড়িতে।
গোল বাঁধে এখানেই, কমলবাবুর বাড়িকে ২টি শিশুকন্যাকে দেখে সন্দেহ হয় প্রতিবেশী ও পরিচারিকাদের। তাঁদের কমলবাবু জানান, মেয়েদের তাঁর কাছে রেখে গিয়েছেন এক আত্মীয়। কিন্তু অবাঙালি কমলবাবুর বাঙালি আত্মীয় হল কী করে? সে প্রশ্নের জবাব পাননি তাঁরা। এর পরই বিষয়টি জানাজানি হতে থাকে।