কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিং বলেছিলেন, কেন্দ্র টাকা আটকে রাখতে চায় না। আর এবার সেই মন্ত্রীই বলে দিলেন তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজ্যের বকেয়া টাকা মেটানো হবে না। ১০০ দিনের কাজ এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে বঙ্গ–বিজেপির সাংসদ দিলীপ ঘোষকে এই কথাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর এই দাবি করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ। যদিও এই টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র বলে প্রতিটি সভা থেকে সোচ্চার হচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঠিক কী বলেছেন বিজেপি সাংসদ? একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রাখায় রাজ্য সরকার বিকল্প কাজের মাধ্যমে মানুষের আর্থিক সংস্থান করছেন। কিন্তু বকেয়া তো রয়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে নয়াদিল্লিতে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘১০০ দিনের কাজ এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় রাজ্যের যা পরিস্থিতি, তাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অত্যন্ত অসন্তুষ্ট। তিনি আমাকে বলেছেন যে, রাজ্যে কেন্দ্রীয় টিমের সঙ্গে কোনওরকম সহযোগিতা করা হচ্ছে না। ঠিকমতো তদন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে না। তদন্তের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজ্যকে তার বকেয়া পাওনা মেটানো হবে না। পশ্চিমবঙ্গ যত দিন না প্রাপ্ত অর্থের খরচের সম্পূর্ণ হিসেব পাঠাচ্ছে, তত দিন নতুন করে কোনও অর্থ মঞ্জুর হবে না।’ অর্থাৎ পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে টাকা মিলছে না।
রাজ্যে কি আবারও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল আসবে? মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষের অবশ্য দাবি, এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাঁকে কিছু জানাননি। তবে তিনি জানান, রাজ্যের মানুষের অসুবিধায় আছে। তাই রাজ্যকে এড়িয়ে কোনওভাবে উপভোক্তাদের সরাসরি টাকা দেওয়া যায় কিনা সেই প্রস্তাব গিরিরাজকে দিয়েছিলেন তিনি। তখন তাঁকে মন্ত্রী জানান, এমন কোনও ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের আইনে নেই। তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বৃহস্পতিবার লোকসভার বিষয় উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের বাজেট বরাদ্দ নিয়ে আলাদা করে আলোচনার দাবি তিনি জানাবেন।
বকেয়া টাকা ছেড়ে দেওয়ার জন্য আপনি গিরিরাজ সিংয়ের কাছে কোনও আর্জি জানিয়েছেন? বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমি কোনও আবেদন জানাইনি। পরিস্থিতি সম্পর্কেই জানতে চেয়েছিলাম। তবে এই বিষয়ে রিপোর্ট না এলে টাকা কীভাবে ছাড়বে কেন্দ্র?’ রাজ্যের বকেয়া পাওনা নিয়ে নিয়মিতভাবেই কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী একাধিক চিঠিও লিখেছেন তিনি। তবে নড়বড়ে সংগঠন নিয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভরাডুবি হবে বুঝতে পেরেই ঘুরিয়ে ঘোলা জলে মাছ ধরতে তৎপর হয়েছে বঙ্গ–বিজেপি বলে মনে করা হচ্ছে। দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘অন্যান্য রাজ্যে ঘুরলে চারটি পুরনো বাড়ির পরে একটি নতুন বাড়ি দেখা যায়। কিন্তু আমাদের রাজ্যে দেখা যাচ্ছে না।’ পাল্টা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,‘রাজ্যসভার নেতা পীযূষ গোয়েল আমায় জানিয়েছেন, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হিসাবে শুভেন্দু অধিকারীর যে পদ পাওয়া উচিত, তা দিলেই পশ্চিমবঙ্গকে সব ধরনের সাহায্য করবে দিল্লি। লজ্জাজনক বিষয়।’