গত দু'বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। অবিলম্বের সেই টাকা ক্ষতিপূরণ-সহ শ্রমিকদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে দিল সারা দেশের ১০০ আইনজীবী। 'নজর' নামে আইনজীবীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এই চিঠি মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে ফের ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প শুরু করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
প্রসঙ্গত, ১০০ দিনের বকেয়া টাকার দাবি জানিয়ে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই সময়ের মধ্যে বকেয়া টাকা না দিলে নিজেই বড়সড় আন্দোলনে নামবেন তিনি বলে জানিয়েও ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার কোচবিহারের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘১ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করব। সাতদিন টাইম দিয়েছি। আমাদের টাকা ফিরিয়ে দাও। মানুষ ঘর পাবেন না, নিজের পরিশ্রমের টাকা পাবেন না, আর তোমরা অট্টালিকায় থাকবে! এটা হবে না। এটা আমি বরদাস্ত করব না। টাকা না পেলে যা করার করব। ১০০ দিনের বকেয়া টাকা না দিলে ২ তারিখ থেকে আমি নিজে ধরনায় বসব।’
নারেগার জব কার্ড দুর্নীতির অভিযোগে টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। আইনজীবী সংগঠনের দাবি, দুনীতির তদন্ত করা আর শ্রমিকের অধিকার বজায় রেখে কাজের মজুরি দেওয়া, দুটি কখনও বিপরীত বিষয় হতে পারে না। অর্থাৎ একটিকে বজায় রেখে অন্যটিকে অস্বীকার করা কখন ও রাষ্ট্রের কর্তব্য হতে পারে না।
পড়ুন। ‘২ তারিখ থেকে আমি নিজে ধরনায় বসব’, ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে চরম হুঁশিয়ারি মমতার
রাজ্যের শাসকদল ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেত মজুর সমিতি-সহ একাধিক সংগঠন মনরেগার বকেয়া টাকা দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, জব কার্ড নিয়ে দুর্নীতি যদি হয়েই থাকে, তবে তদন্ত চলুক, কিন্তু তার জন্য সব শ্রমিকের টাকা আটকে রাখা যেতে পারে না।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কাটাখাল গ্রামে তথ্যনুসদ্ধানে যায়। সেখানে মনরেগা শ্রমিক সঙ্গে কথাও বলে তারা। তার ভিত্তিতে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে এই চিঠি দেওয়া হচ্ছে জানিয়েছে সংগঠনটি। তাদের অভিযোগ কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলের মধ্যে 'লড়াইয়ে' কেন সাধারণ শ্রমিকের জীবন-জীবিকা নিয়ে টানাটানি হবে।