সন্দেশখালি নিয়ে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই বিজেপিকে আক্রমণ শানালেন মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ভাইরাল ভিডিয়োয় (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) এক ব্যক্তির কণ্ঠস্বর শোনা গিয়েছে, যিনি দাবি করছেন যে ধর্ষণ-সহ সন্দেশখালির বিভিন্ন ঘটনা সাজানো হয়েছিল। ওই ব্যক্তি আদতে বিজেপি নেতা বলে দাবি করা হয়েছে। সেই ভিডিয়োর প্রেক্ষিতে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, বিজেপি যে ভিতর থেকে কতটা পচে গিয়েছে, সেটা ভাইরাল ভিডিয়ো থেকে বোঝা গেল। একইসুরে অভিষেক বলেন, ‘নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে বাংলাকে বদনাম করতে বাংলা-বিরোধী বিজেপি যেভাবে পুরোটা সাজিয়েছিল, সেটা প্রত্যেক নাগরিকের দেখা উচিত।’
ভাইরাল ভিডিয়ো নিয়ে মমতা কী বলেছেন?
মমতা বলেন, ‘সন্দেশখালির হতবাক করা স্টিং অপারেশন দেখাল যে বিজেপি ভিতর থেকে কতটা পচা। বাংলার প্রগতিশীল চিন্তাভাবনা এবং সংস্কৃতির প্রতি ওদের যে ঘৃণা আছে, সেটার জন্য বাংলা-বিরোধীরা যতরকমভাবে আমাদের রাজ্যকে বদনাম করা যায়, সেটার জন্য চক্রান্ত করেছিল।’
অভিষেক কী বলেছেন?
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘সন্দেশখালির স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো দেখে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছি বললেও কম বলা হবে। নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে বাংলাকে বদনাম করতে বাংলা-বিরোধী বিজেপি যেভাবে পুরোটা সাজিয়েছিল, সেটা প্রত্যেক নাগরিকের দেখা উচিত। এই ঘৃণ্য ঘটনাটি ইতিহাসে সবথেকে বড় আকারে ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রতীক হয়ে গেল। লজ্জাজনক।’
ভাইরাল ভিডিয়োয় কী আছে?
'উইলিয়ামস' নামে একটি ইউটিউব অ্যাকাউন্ট থেকে ওই ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) আপলোড করা হয়েছে। তাতে একজন ব্যক্তিকে স্যান্ডো গেঞ্জি পরে থাকতে দেখা গিয়েছে। ওই ব্যক্তি আদতে সন্দেশখালি-২ ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল বলে দাবি করা হয়েছে।
ওই ভিডিয়োয় এক ব্যক্তিকে (প্রথম ব্যক্তি) বলতে শোনা গিয়েছে, 'বুঝতে পারছ, কী লেভেলের কাজ করেছে? রেপ হয়নি, তাকে রেপে কনভার্ট করে দিয়েছে।' সেই কথাটা শেষ হতে না হতেই স্যান্ডো গেঞ্জি পরা ব্যক্তিকে হাসতে দেখা গিয়েছে। তখন অপর একজন ব্যক্তিকে (দ্বিতীয় ব্যক্তি) বলতে শোনা গিয়েছে, 'ধরো আজ তোমার বাড়ির মিসেসকে, আমার বাড়ির মিসেসকে করাতে পারত? আমরা বর হয়ে করাতে পারব না। দাদা সেখানে বাইরের লোক তাদেরকে দিয়ে এটা করিয়েছে। তার মানে ক্ষমতা বুঝতে পারছ?'
তারপরে দ্বিতীয় ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘ব্রেনওয়াশটা কীভাবে করতেন, সেটা বলেন দেখি।’ তখন স্যান্ডো গেঞ্জি পরা ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, 'আমাদের নির্দেশ ছিল। শুভেন্দুদা সাহায্য করেছে। শুভেন্দুদা বলেছিল, এটা না করলে, তাবড়-তাবড় মালকে গ্রেফতার করাতে না পারলে তোমরা ওখানে দাঁড়াতে পারবে না।' তাঁকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘শুভঙ্কর ছেলেটা প্রথম থেকেই সাথ দিয়েছিল। কিন্তু ও পরে কিছু অর্থনৈতিক তছনছ করে ফেলে….। ও তো একটু হটে গেল।’
তারইমধ্যে প্রথম ব্যক্তিকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘একটা মেয়ে যখন লিখত, আমায় রেপ করেছে। মানে যেটা হয়নি, সেটা লিখছে। তখন তো প্রথমে ওরা না বলত আপনাকে।’ সেটার প্রেক্ষিতে স্যান্ডো গেঞ্জি পরা ব্যক্তিকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘না, না বলেনি। যেটা বলেছি, সেটা শুনেছে। আপনাদের এই আন্দোলনকে ধরে রাখতে গেলে শেষপর্যন্ত, ওদের গ্রেফতার না করলে আপনাদের এই আন্দোলন সফল হবে না।’ তিনি দাবি করেছেন, বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র প্রথমে অভিযোগ করেন। তারপর বাকিরা করেন। সেইসঙ্গে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'না, কাউকে রেপ করা হয়নি।'
শুভেন্দুর প্রতিক্রিয়া
সন্দেশখালির ভাইরাল ভিডিয়ো প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন যে পুরোটা যাচাই করে দেখবেন। তারপর মুখ খুলবেন। তৃণমূলের তরফে গলা নকলও করা হতে পারে।