অভিনব মনোনয়নের জমা দেওয়ার মিছিল দেখল পুরুলিয়া শহর। শুক্রবার হাতে সংবিধান নিয়ে কাড়ায় (মহিষ) চড়ে মনোনয়ন জমা দিলেন পুরুলিয়ার কুড়মি প্রার্থী অজিত মাহাতো। শুধু তাই নয় তাঁর এই মনোনয়ন শোভাযাত্রায় ছিল চৌডল, করম পরবে জাওয়া, ধামসা-মাদল-সহ নানা বাদ্যযন্ত্র।
শুক্রবার দুপুরে মিছিল করে মনোনয়ন জমা দেন কুর্মি সমাজের প্রধান নেতা অজিত মাহাতো। এদিন মিছিলে জনজোয়ার ছিল চোখে পড়ার মতো। ভিড়ের জেরে প্রশাসনিক ভবনের ব্যারিকেড ভেঙে যায়। পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম থেকে হয় পুলিশকে। পুরুলিয়ার ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা উপেক্ষা করে ভিড় ছিল চোখে পড়া মতো। সবার হাতে ছিল কুড়মি সমাজের হলুদ রঙের পতাকা। মিছিলে ছিল শিংওয়ালা ভেড়াও।
আর পড়ুন। ভোটে দলের থেকে ফান্ড মেলেনি, টিকিট ফেরত দিলেন পুরীর কংগ্রেস প্রার্থী
কেন এই আয়োজন, সে প্রসঙ্গে অজিত মাহাতো বলেন,'মানভুঁইয়া সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। কাড়া লড়াইয়ের মতো ঐতিহ্যবাহী পরবকে প্রশাসন বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। জাতিসত্তার লড়াইয়ের সঙ্গে সাবেক মানভূমের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখারও সংগ্রাম। সেই কারণেই মনোনয়ন পর্বে আমাদের এমন আয়োজন।'
বিজেপি প্রথম থেকে কুড়মি প্রার্থীকে 'ভোট কাটুয়া' বলে কটাক্ষ করছে। এর জবাবে অজিত মাহাতো বলেন, ' আজ বিজেপির জন্য দেশে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হচ্ছে। তাই হাতে সংবিধান নিয়েই মনোনয়ন জমা করতে যাই। যে বিজেপি আমাদেরকে ‘ভোট কাটুয়া’ বলছে, তারা এবার তিনে চলে যাবে। আমাদের লড়াই হবে তৃণমূলের সঙ্গে। জয়ী হব আমরাই। কারণ আমাদের হাতে ৩৫ শতাংশ কুড়মি ভোট। সঙ্গে হিতমিতান (একাধিক সামাজিক সংগঠন) রয়েছে। এই বিজেপি আমাদের জন্য কোনও কিছু করেনি। বিজেপির সাংসদ তথা প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো যদি চাইতেন আদিবাসী তালিকাভুক্তের দাবি তিনি সংসদে তুলতেন।'
আরও পড়ুন। ঈশ্বর যেন দেবকে এভাবেই সবসময় বাঁচিয়ে দেন! হেলিকপ্টার বিভ্রাট নিয়ে বললেন হিরণ
ওই লোকসভা কেন্দ্র শান্তিরাম মাহাতোকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। সে প্রসঙ্গ অজিত মাহাতো বলেন, ' রাজ্যের দু’বারের মন্ত্রী তৃণমূলের শান্তিরাম মাহাতো কুড়মি হয়েও জনজাতির পাশে নেই। এর জবাব মানুষ ভোটে দেবেন।'
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে কাড়া লড়াই বন্ধ করতে উদ্যোগী হয় পুলিশ। সেই সময় 'জজলং টাইগার' অর্থাৎ যে মহিষের পিঠে চড়ে মনোনয়ন জমা দেন তাকে নিয়েই বরাবাজার ও কোটশিলায় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ। তাকে নিয়ে হলুদ রং করে প্রচারও চালাচ্ছে কুড়মি সমাজ।