প্রায় ৩৪০০ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত দেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি। এই কয়লা খনি খননের প্রথম পর্যায়ের কাজ হয়েছিল এক বছর আগে। আর এবার দ্বিতীয় পর্যায়ের খননের কাজ দ্রুত শুরু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছে সরকার। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে খনন করা হবে।
আরও পড়ুন: দেউচার জমিদাতাদের দেওয়া হচ্ছে না চাকরি, সিঙ্গুরের মতো আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
বীরভূমে অবস্থিত এই এলাকায় বিপুল কয়লার ভান্ডার আছে জানার পরেই জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। এরজন্য জমিদাতাদের পুনর্বাসন এবং চাকরির ব্যবস্থা করে রাজ্য। তারপর ২০২২ সালের ১৪ জুলাই প্রথম পর্যায়ে বীরভূম জেলার সিউড়ি সদর মহম্মদবাজারের কেন্দ্রপাহাড়িতে দেউচা-পাঁচামি প্রকল্পে খননের কাজ শুরু হয়। তার ঠিক এক বছর পর দ্বিতীয় পর্যায়ের খননের কাজ শুরু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে, এই জমির উপরের স্তরে রয়েছে ব্যাসল্টের স্তর। সেগুলি তুলতে গিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রচুর কাদা, মাটি, রাবিশ এবং ধুলো উঠে আসবে। সেগুলি কোথায় জমা করা যায়? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনকে জমি দেখতে বলেছে রাজ্য সরকার। সেই জমি ঠিক হলেই দ্বিতীয় পর্যায়ের খননের কাজ শুরু হবে। এর ফলে যে কয়লা উত্তোলন হবে তাতে রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা যেমন মিটবে তেমনি বাইরেও এই কয়লা রপ্তানি করে প্রচুর আয় করবে রাজ্য, যা বাংলার অর্থনীতিকে একটি সুনির্দিষ্ট দিকে পরিচালনা করবে। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে নির্দেশ আসার পরেই জেলা প্রশাসনের মধ্যে এ নিয়ে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এই প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণের জন্য সরকার ঘোষণা করেছিল জমিদাতাদের নির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ এবং একটি করে চাকরি দেওয়া হবে। সে মতো সমীক্ষাও করেছিল রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই ক্ষতপুরণ দেওয়ার কাজ প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু তারপরেও অনেক জমিদাতা চাকরি ও ক্ষতিপূরণ পায়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন। এই অভিযোগ জানিয়ে গত সপ্তাহে জেলা শাসকের দফতরের গিয়ে বিক্ষোভ দেখান জমিদাতাদের একাংশ। প্রসঙ্গত, সিঙ্গুরের মতো সমস্যা যাতে না হয় তার জন্য আগে থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন জোর করে কারও কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। শুধুমাত্র ইচ্ছুক জমিদাতাদের কাছ থেকে জমি নেওয়া হবে। তার জন্য জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণ এবং চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল রাজ্য সরকার। জমিদাতাদের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের ক্রমিক নম্বর অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ এবং চাকরি দেওয়া হয়নি। তাঁদের পরে যাদের ক্রমিক নম্বর রয়েছে তাঁদের চাকরি এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এরকম অভিযোগ জানিয়ে গত সপ্তাহে ৬৩০–এর বেশি জমিদাতা জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। পরে তাঁদের সঙ্গে জেলা শাসক কথা বলে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন।