দেউচা, পাঁচামি কয়লাখনি নিয়ে এক সময় কম আন্দোলন হয়নি। গ্রামবাসী এবং জমিদাতারা এ নিয়ে আন্দোলন করেছিলেন। তবে পরে রাজ্য সরকারের আশ্বাসে তাঁরা সেই আন্দোলন বন্ধ করেন। সরকার ঘোষণা করেছিল জমিদাতাদের নির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ এবং একটি করে চাকরি দেওয়া হবে। সে মতো সমীক্ষাও করেছিল রাজ্য সরকার।ইতিমধ্যেই ক্ষতপুরণ দেওয়ার কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তারপরেও অনেক জমিদাতা চাকরি ও ক্ষতিপূরণ পায়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন জমির দাতাদের একাংশ। এই অভিযোগ জানিয়ে জেলা শাসকের দফতরের গিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন জমিদাতাদের একাংশ।
আরও পড়ুন: দেউচা পাঁচামিতে জমির ক্ষতিপূরণ প্যাকেজে এত সুবিধা,অন্য়ত্র নয় কেন? প্রশ্ন আদালতের
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জেলা শাসকের দফতরে পৌঁছে ধরনায় বসেন জমিদারা। রাত পর্যন্ত তাঁরা সেখানে এভাবেই বিক্ষোভ দেখান। শেষ পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে জেলা শাসক কথা বলে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিলে তাঁরা বিক্ষোভ তুলে নেন। প্রসঙ্গত, এনিয়ে সতর্ক রাজ্য সরকার। সিঙ্গুরের মতো সমস্যা যাতে না হয় তার জন্য আগে থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন জোর করে কারও কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। শুধুমাত্র ইচ্ছুক জমিদাতাদের কাছ থেকে জমি নেওয়া হবে। তার জন্য জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণ এবং চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই মতোই অনেককে পুনর্বাসন এবং চাকরি দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু, জমিদাতাদের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের ক্রমিক নম্বর অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ এবং চাকরি দেওয়া হয়নি।
তাঁদের পরে যাদের ক্রমিক নম্বর রয়েছে তাঁদের চাকরি এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এরকম অভিযোগ জানিয়ে ৬৩০–এর বেশি জমিদাতা এদিন জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। এক জমিদাতার বক্তব্য, তিনি দু বছর আগে জমি দিয়েছিলেন কিন্তু এখনও কোনও ক্ষতিপূরণ এবং চাকরি পাননি। এরকম অনেকেই আছেন। বারবার আবেদন করার পরেও তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের হুঁশিয়ারি, ক্ষতিপূরণ এবং চাকরি না দিলে সিঙ্গুরের মতোই আন্দোলন হবে। জানা গিয়েছে, এরপরে জেলাশাসক জমিদাতাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানিয়েছেন চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাঁদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৩৪০০ একর জুড়ে অবস্থিত এই কয়লা খনি। এই কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন এবং সেই কয়লা বিদ্যুতের কাছে ব্যবহার করা হবে। এরফলে বিদ্যুতের সমস্যা থাকবে না। এই প্রকল্পের জন্য ৪৮৩৮ টি পরিবারের মধ্যে ৪৩২৮ টি পরিবারই জমি দিয়েছে।