ঘাটালের পর মালদা। আবার জীবিত শিশুকে মৃত বলে ঘোষণা করলেন চিকিৎসক। তখন শিশুর দেহ নিয়ে বাড়িতে ফিরতেই হতবাক পরিবারের লোকজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা। কারণ শিশুটি তৎক্ষণাৎ হাত–পা নাড়তে শুরু করে। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার গোবরা এলাকায়। চিকিৎসকের গাফিলতির জন্য অবশেষে মৃত্যু হল বলে ওই শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছে মালদায়? স্থানীয় সূত্রে খবর, এই ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে হরিশ্চন্দ্রপুর–২ নম্বর ব্লকের ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। এই ঘটনাকে ঘিরে ওই রাত থেকে আজ, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ভালুকা এলাকায়। ভালুকা এলাকার গোবরা গ্রামের বাসিন্দা তপন মহালদারের পাঁচ দিনের শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। বাড়ির সদস্যরা বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটিকে নিয়ে স্থানীয় ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। তখন ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার আইফারানা ইয়াসমিন প্রাথমিক চিকিৎসা করার পর শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তারপর ঠিক কী ঘটল? শিশুটি মৃত জেনে তৎক্ষণাৎ বাড়িতে নিয়ে আসে পরিবারের সদস্যরা। আর বাড়ির লোকজন যখন শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে আসে তখন শিশুটি চোখ মেলে তাকাতে থাকে। এমনকী শ্বাস–প্রশ্বাস নিতে শুরু করে বলে পরিবারের সদস্যদের দাবি। পরিবারের সদস্যরা তখন আবার ওই শিশুটিকে ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তর করে দেন। আর সেখানেই ওই শিশুটির মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান আর কিছুক্ষণ আগে শিশুটিকে নিয়ে আসলে বাঁচানো সম্ভব ছিল। দেরি হয়ে গিয়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শিশুটির আত্মীয়স্বজন এবং গ্রামবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ তুলে রাতেই ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখান এবং চিকিৎসককে দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখেন। এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ভালুকা ফাঁড়ির বিশাল পুলিশ বাহিনী। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ,স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকের গাফিলতির কারণেই শিশুটি মারা গিয়েছে। চিকিৎসক আইফারানা ইয়াসমিনের উপযুক্ত শাস্তির দাবি তুলেছেন পরিবারের সদস্যরা। অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক জানান,শিশুটিকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তার আগেই শিশুটি মারা গিয়েছিল।